জেনে নিন লক্ষ্য অর্জনের সহজ ১০টি পন্থা সম্পর্কে

আপনি কি আপনার লক্ষ্যের প্রতি মনোযোগী হতে সমস্যায় পড়েন? বিশেষ করে যখন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যের প্রতি ফোকাস করাটা অত্যন্ত জরুরী হয়ে উঠে তখন? চিত্তবিক্ষেপের ফলেই এমনটা হয়ে থাকে। আপনার লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য আপনার একাগ্রতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আসুন জেনে নেই লক্ষ্য অর্জনের সহজ ১০টি পন্থা সম্পর্কে।

১। একাগ্র দৃষ্টি
কোন একটি বস্তু বা আলোক শিখার প্রতি একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকুন চোখের পলক ফেলা ছাড়াই। এর ফলে প্রচুর উপকার লাভ করা সম্ভব; প্রথমত এটি আপনার মনোযোগ বৃদ্ধি করবে। দ্বিতীয়ত এটি আপনার দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটাবে। এমনও বলা হয়ে থাকে যে, এর অনেক বেশি অনুশীলন আধ্যাত্মিক ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। এর জন্য দেয়ালে ১.৫ সেন্টিমিটার ব্যসের একটি গোলক এবং এর মাঝে একটি বিন্দু আঁকুন এবং এর সামনে ২ মিটার দূরে আরাম করে বসে শরীর শিথিল করে বিন্দুটির দিকে পলক ফেলা ছাড়াই তাকিয়ে থাকুন। এরমাঝে যদি অন্য কোন চিন্তা আসে তাহলে সেই চিন্তাটিকে সরিয়ে দিয়ে কালো বিন্দুর দিকেই মনযোগী হোন যতক্ষণ না চোখে পানি চলে আসে। তবে খুব বেশি চেষ্টা করবেন না। এই প্রক্রিয়াটি দিনে দুইবার করুন সকালে ও সন্ধ্যায়।

২। ইয়োগা
ইয়োগা অনুশীলনের অগুনিত সুবিধা আছে। যোগব্যায়াম শুধু নিরাময়েরই উপায় নয় বরং জীবন বদলে দেবারও উপায়। ইয়োগা আমাদের মনকে শান্তি দিতে পারে। এটি আমাদের শরীর, মন ও আত্মার মাঝে সম্পর্ক স্থাপন করে।

৩। স্বাস্থ্যকর খাদ্য
“সুস্থ আত্মা সুস্থ শরীরে বাস করে” এই উদ্বৃতিটি দ্বারা বোঝা যায় সুস্থ দেহের গুরুত্ব সম্পর্কে। সঠিক খাদ্য গ্রহণের ফলেই শরীর সুস্থ থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। তাই বিভিন্ন ধরণের ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া উচিৎ, একবারে অনেক বেশি পরিমাণে খাওয়ার চেয়ে অনেক বারে অল্প অল্প করে খান। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। স্বাস্থ্যবান মানুষের অনেক বেশি এনার্জি থাকে এবং তারা তাদের লক্ষ্যের প্রতি ফোকাস করতে পারে এবং কঠোর পরিশ্রম করতে পারে।

৪। ইচ্ছাশক্তি
কোন বিষয়টি আপনাকে অনুপ্রাণিত বা উৎসাহিত করে তা সম্পর্কে জানুন। এটা যেকোন কিছুই হতে পারে। আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে লক্ষ্যটি সম্পর্কে নিজেকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিন। আপনার পদক্ষেপের ফলে কোন ভুল হলে ভুল থেকে শিক্ষা নিন এবং এগিয়ে যান। কোন কিছুই আপনাকে দমিয়ে রাখতে পারবেনা। সংগ্রামই জীবনে সুখের গ্যারান্টি দিতে পারে। এই প্রেরণা বা ইচ্ছাশক্তিই আপনাকে আপনার লক্ষ্যের প্রতি একাগ্র হতে সাহায্য করবে।

৫। ক্ষোভের কারণ দূর করুন
লক্ষ্য অর্জনের পথে বড় বাঁধা হচ্ছে ক্ষোভ। এটি হতে পারে সম্পর্কের সমস্যা, পারিবারিক সমস্যা, কোন কিছুর প্রতি লালসা, কাজের চাপ বা অন্য কোন কারণেও হতে পারে যা বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ক্ষোভের কারণ দূর করা। এর জন্য নিজেকে নিজে সাহায্য করুন বা অন্যের সাহায্য নিন।

৬। আত্মনিয়ন্ত্রণ
লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আত্মনিয়ন্ত্রণ অত্যাবশ্যকীয়। কোন সন্দেহ নেই যে আমাদেরকে উৎসাহিত করার কাজের চেয়ে নিরুৎসাহিত করার মত কাজই বেশিরভাগ সময় আমাদের চারপাশে হয়ে থাকে। এই সমস্যাটির সবচেয়ে সহজ সমাধান হচ্ছে নিজের আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা যাতে অন্য কেউ আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে।

৭। উক্তি
আপনাকে অনুপ্রাণিত করে এমন উক্তি সংগ্রহে রাখুন। যখন আপনার মনে হবে যে ভেঙ্গে পড়ছেন তখন আপনার সংগ্রহের খাতাটি খুলে পড়ুন অথবা কোন গান শুনুন যা আপনাকে প্রেরণা দিতে পারে।

৮। বন্ধুত্ব করুন তাদের সাথে যারা আপনাকে অনুপ্রাণিত করে
লক্ষ্য অর্জনের পথে এমন মানুষের সান্নিধ্যে থাকা উচিৎ যারা আপনাকে অর্জিত লক্ষ্যে দেখে ঈর্ষান্বিত হবে এমন মানুষের সাথে নয়, বরং যারা খুশি হবে এমন মানুষের সাথে। কেউ হয়তো আপনাকে নীরবে উৎসাহিত করবে আবার কেউ আপনার সাথে কাজ করেই আপনার অর্জনের আনন্দ উপভোগ করবে। ভালো মানুষের সংস্পর্শ অগণিত উপকার বয়ে আনে।

৯। ইতিবাচক চিন্তা
ইতিবাচক চিন্তা অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারে। ইতিবাচক চিন্তা ফলাফল নিয়ে ভাবার ক্ষেত্রে ভয় ও ব্যর্থতার পরিবর্তে আপনার এনার্জি ও ইচ্ছাশক্তিকে উদ্দীপিত করে।

১০। কঠিন পরিশ্রম
যেকোন কাজ সম্পন্ন করার জন্যই কঠিন পরিশ্রম করা জরুরী। সংগ্রামের ফলেই পড়ে গেলেও উঠে দাঁড়ানোর শক্তি অর্জিত হয়। কঠিন পরিশ্রমের সাথে সাথে বুদ্ধিমত্তাও কাজে লাগাতে হবে। এমন পন্থা অবলম্বন করতে হবে যাতে কম সময়ে সঠিকভাবে কাজটি সম্পন্ন করা যায়।

আলবার্ট আইনেস্টাইন বলেছেন, “জীবন বাইসাইকেলে আরোহণের মত, ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে আপনাকে চলতেই হবে”।



মন্তব্য চালু নেই