জেনে নিন যে সাধারণ অভ্যাসগুলো আপনার কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে
ইদানিং প্রায়ই কিডনির বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে শোনা যায়। কিডনি মানব দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । এটি মানবদেহের রক্তকে বিশুদ্ধ করে, হরমোন উৎপন্ন করে, ও মূত্রত্যাগের মাধ্যমে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। কিডনির রোগ অতীতে ছিলো এখনো আছে। কিন্তু এখন আগের চাইতে অনেক বেশি। কারন বর্তমান সময়ে মানুষের জীবন যাত্রায় এসেছে আমূল পরিবর্তন ও খাদ্যাভ্যাসের নানা পরিবর্তন ও সংযোজন এর কারনে কিডনিও ভয়োংকর ভাবে ক্ষতির স্বীকার হচ্ছে। চলুন জেনে নেই কোন কোন কারনে আমাদের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মূত্র ত্যাগে ব্যাঘাত:
ঠিক মতো মূত্র ত্যগ না করলে কিডনি সমস্যা দেখা দেয়। অনেকে আছে মূত্র চেপে রাখে। এটা একটা বাজে স্বভাব। মেয়েদের মধ্যে এই স্বভাব সবচাইতে বেশি। মূত্র বেশি সময় চেপে রাখলে কিডনিতে চাপ পরে ফলে কিডনির সমস্যা দেখা দেয়।
ধূমপান:
ধুমপান পরিহার করুনঃ অধুমপায়ীদের তুলনায় ধুমপায়ীদের কিডনি ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা শতকরা ৫০ গুণ বেশী। শুধু তাই নয় ধুমপানের কারণে কিডনিতে রক্তপ্রবাহ কমে যেতে থাকে এবং এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতাও হ্রাস পেতে শুরু করে। এভাবে ধুমপায়ী একসময় কিডনি ফেইলুর রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়।
নিয়োমিত ব্যায়াম না করা:
নিয়োমিত ব্যায়াম মানুষের শরীরকে সুস্থ ও সুন্দর রাখে। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে শরীরের রক্ত প্রবাহ ঠিক থাকে না ও শরীরে চর্বি জমে যায় ফলে কিডনি আক্রান্ত হতে পারে।
ডায়াবেটিস:
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর শতকরা ৫০ জনই কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রনে না থাকলে কিডনি নষ্ট হবার ঝুকি আরো বেড়ে যায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখুন,নিয়মিত আপনার রক্তের সুগার পরীক্ষা করিয়ে দেখুন তা স্বাভাবিক মাত্রায় আছে কিনা, না থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
উচ্চ রক্তচাপ:
অনেকেরই ধারনা যে উচ্চ রক্তচাপ শুধু ব্রেইন স্ট্রোক (stroke)আর হার্ট এটাকের (heart attack)এর ঝুকি বাড়ায়,তাদের জেনে রাখা ভালো যে কিডনি ফেইলুর হবার প্রধান কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ। তাই এ রোগ থেকে বাঁচতে অবশ্যই আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে।
পরিমাণ মত না ঘুমানো:
রাতে ঘুমানোর সময়টাতে কিডনির ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু গুলো সেরে ওঠে। তাই রাতে ঠিক মতো না ঘুমালে শরীরের বিশ্রাম হয় না এবং কিডনির ক্ষতি হয়।
অতিরিক্ত পেইন কিলার গ্রহণ :
কারো কারো একটুখানি ব্যাথাতেই পেইন কিলার খাওয়ার অভ্যাস আছে। ঘন ঘন অতিরিক্ত পেইন কিলার খেলে দ্রুত কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে যায়।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খাওয়া:
কিডনির মূল কাজ হলো শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয়া। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খেলে কিডনি তার কাজ ঠিক মতো করতে পারেনা। ফলে কিডনির ক্ষতি হয়। তাই কিডনি ভালো রাখতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত।
অতিরিক্ত লবন খাওয়া:
অনেকেই খাবারের সাথে প্রচুর লবণ খেয়ে থাকেন। লবণ শরীরের জন্য জরুরি হলেও প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবণ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং কিডনির ক্ষতি হয়।
ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব:
প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খেলে কিডনি ভালো থাকে। ভিটামিন বি ৬ ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। সূত্র: হেলদি এন্ড ন্যাচারাল অয়াল্ড।
সম্পাদনা: আবু রায়হান মিকাঈল
মন্তব্য চালু নেই