জেনে নিন, আবহাওয়া সংকেতের বিভিন্ন নম্বরের অর্থ কী
আবহাওয়ার দপ্তরের সতর্কতা সংকেত নিয়ে অনেকে বিপাকে পড়েন। কতো নম্বরে কী বুঝায় তা নিয়ে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি থাকার কারণেই এমনটি হয়। তবে এইসব সংকেতের অর্থ জানা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে যারা নদীপথে ভ্রমণ করেন এবং উপকূলে বসবাস করেন। তা না হলে প্রলঙ্করী কোনো ঝড় আঘাত হানার আগেই যথাযথ প্রস্তুতি না নেয়ার কারণে অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল থেকে কিছুটা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে এসে ক্রমেই বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শুক্রবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কতা কেন্দ্রের বিশেষ বুলেটিনে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। আসুন জেনে নিই এসব সংকেতের মানে:
১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত: এর অর্থ বঙ্গোপসাগরের কোনো একটা অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া বইছে এবং সেখানে ঝড় সৃষ্টি হতে পারে। (একটি লাল পতাকা)
২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত: সমুদ্রে নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে৷
৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত: এর অর্থ সমুদ্র ও নদী বন্দরে দমকা হাওয়া বইবে। (দুইটি লাল পতাকা দেখানো হয়)
৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত: সমুদ্র ও নদী বন্দর এলাকায় ঝড় হবে। তবে এতোটা বিপদের আশঙ্কা নেই যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫ নম্বর বিপদ সংকেত: অল্প বা মাঝারি ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্দরের আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ থাকবে এবং ঝড়টি চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষিণ দিক দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে (মংলা বন্দরের বেলায় পূর্ব দিক দিয়ে)।
৬ নম্বর বিপদ সংকেত: অল্প বা মাঝারি ধরনের ঝড় হবে এবং আবহাওয়া দুযোগপূর্ণ থাকবে। ঝড়টি চট্টগ্রাম বন্দরের উত্তর দিক দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। (মংলা বন্দরের বেলায় পশ্চিম দিক দিয়ে)।
৭ নম্বর বিপদ সংকেত: অল্প অথবা মাঝারি ধরনের ঘূর্ণিঝড় হবে এবং এজন্য আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রবন্দরের খুব কাছ দিয়ে অথবা উপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। (তিনটি লাল পতাকা দেখানো হয়)
৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত: প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় হবে এবং বন্দরের আবহাওয়া খুবই দুর্যোগপূর্ণ থাকবে। ঝড়টি চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষিণ দিক দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে আর মংলা বন্দরের পূর্ব দিক দিয়ে যাবে।
৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত: প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বন্দরের আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম বন্দরের উত্তর দিক দিয়ে উপকূল অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে এবং মংলা বন্দরের বেলায় পশ্চিম দিক দিয়ে যাবে।
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত: প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বন্দরের আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ থাকবে এবং ঘূর্ণিঝড়টির বন্দরের খুব কাছ দিয়ে অথবা উপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
১১ নম্বর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার সংকেত: ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সাথে সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং স্থানীয় কর্মকর্তার বিবেচনায় চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষ করে মে-জুন (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) মাসে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়গুলো আঘাত হানে। এই কারণেই এই মওসুমে উপকূলের বাসিন্দাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ভালো। আগাত বার্তা পেতে রেডিওতে কান পেতে থাকুন। অথবা নেটওয়ার্কের ভেতরে থাকলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (http://www.bmd.gov.bd/?/home/) ভিজিট করে সর্বশেষ বুলেটিন খেয়াল করুন।
মন্তব্য চালু নেই