জিহ্বার আলসার ও ক্যান্সার জেনে নিন

মানবদেহে মুখের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানের ন্যায় জিহ্বাতেও আলসার দেখা দিতে পারে।

অনেক সময় জিহ্বার প্রদাহজনিত সমস্যাকে আমরা আলসার ভেবে ভুল করি। তবে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ থেকে আলসার দেখা দিতে পারে। আলসার যদি সহজে ভাল না হয় বা সঠিক চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে ক্যান্সার আতঙ্কে ভোগাটাই স্বাভাবিক।

জিহ্বার উপরিভাগে দানাদার বস্তুকে জিহ্বার প্যাপিলা বলা হয়। প্যাপিলাতে টেস্ট বাড থাকে যার মাধ্যমে আমরা খাদ্যদ্রব্যের স্বাদ গ্রহণ করে থাকি। মানবদেহের জিহ্বাতে আনুমানিক দশ হাজার টেস্ট বাড থাকে। যদি জিহ্বাতে প্যাপিলা না থাকত তাহলে জিহ্বা খুবই মসৃণ এবং পিচ্ছিল রূপ ধারণ করত।

এছাড়া খাদ্যদ্রব্যের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব হত না। জিহ্বাতে মোট চার ধরনের প্যাপিলা বিদ্যমান। জিহ্বার পেছনের দিকে দুই পাশে ফলেট প্যাপিলা থাকে। জিহ্বার পেছনের দিকে এক ধরনের ঘা দেখা যায়। অনেক সময় ফোলাভাব লক্ষ্য করা যায়। তবে এ ফোলাভাব জিহ্বার পেছনের দিকে এক ধরনের ঘা দেখা যায়। অনেক সময় হতে পারে। তবে যে সব রোগীর জিহ্বার এক পাশে ফোলাভাব থাকে কিন্তু অন্য পাশ স্বাভাবিক তাদের ক্ষেত্রে রোগীরা তো বটেই, ডাক্তাররা পর্যন্ত ক্যান্সারের প্রাথমিক অবস্থা ভেবে ভুল করে থাকেন।

আসলে এ অবস্থাটি নাম ফলেট প্যাপিলাইটিস বা ফলেট প্যাপিলার প্রদাহ। ধূমপান, পান সেবন, এলকোহল গ্রহণ বা নেশা জাতীয় কোন দ্রব্য গ্রহণে জিহ্বার পেছনের এই অংশে আলসারের মতো লালচে ভাব দেখা যায় এবং সামান্য ফুলে যেতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করলে জিহ্বার এ প্যাপিলার প্রদাহ ভাল হয়ে যায়।

জিহ্বার অন্যান্য প্যাপিলাতেও ব্যথা বা প্রদাহ হতে পারে। জিহ্বার এ প্যাপিলার প্রদাহ ভাল হয়ে যায়। জিহ্বার অন্যান্য প্যাপিলাতেও ব্যথা বা প্রদাহ হতে পারে। জিহ্বায় কোন আঘাত লাগলে জিহ্বার প্যাপিলাতে ব্যথা বা ঘা হতে পারে। জিহ্বায় কামড় পড়লেও এমন ব্যথা বা ঘা হতে পারে।

অনেকে অবচেতন মনে জিহ্বার অগ্রভাগ উপরের সামনের দাঁতের পেছনে ধাক্কা দিয়ে থাকে। এটি যখন বদ অভ্যাসে পরিণত হয় তখন জিহ্বায় প্রদাহ হতে পারে। দাঁতের কোন অংশ ধারালো থাকলে তা থেকে জিহ্বায় ঘা হতে পারে। যাদের দাঁত কামড়ানোর অভ্যাস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে জিহ্বার পাশে প্রদাহ এবং ঘা দেখা যেতে পারে।

তবে জিহ্বার কোন আলসার দীর্ঘদিন যাবৎ ভাল না হলে সে ক্ষেত্রে শরীরে অন্য কোন রোগ না থাকলে অবশ্যই তা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পরীক্ষা করে দেখা উচিত। জিহ্বায় কোন ঘা দেখা দিলেই কথায় কথায় জিহ্বা কেটে বায়েপসি করার কোন প্রয়োজন নেই। বায়োপসি করার আগে অবশ্যই সঠিক রোগ নির্ণয় করা জরুরি। তাই জিহ্বার আলসার ও ক্যান্সার সম্পর্কে সবাইকে আরও বেশি মনযোগী হতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই