‘জামায়াত’ নেতা এখন আ’লীগ সভাপতি

নীলফামারীতে জামায়াত নেতা এখন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নব্য এই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি নানা সুবিধা গ্রহণ, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় ওই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় সক্রিয়ভাবে জামায়াতের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের এন্তাজুল ইসলাম ওরফে এন্তা। হয়েছিলেন ওয়ার্ড গ্রাম সরকারের সদস্যও। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সভাপতির পদ দখল করেন এন্তা।

আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার পর কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), টেস্ট রিলিফ’র (টিআর) কাজ না করে অর্থ আত্মসাত-সহ ভিজিএফ’র চাল ও মাটিকাটা কর্মসূচিতে চাল বিতরণ না করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এছাড়া আওয়ামী লীগের আবরণে প্রকৃতপক্ষে জামায়াতের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করা ছাড়াও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছেন তিনি। তার কর্মকাণ্ডে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিব্রত হচ্ছেন।

৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের নামে এন্তা জামায়াতের রাজনীতি করছেন নিজ এলাকায়। তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে দলের।

তিনি ‌আরো বলেন, কীভাবে জামায়াত নেতা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন? ওয়ার্ডে কি বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সৈনিক ছিল না! অতি দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবেন।

এদিকে এন্তা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন জানিয়ে টুপামারী ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, সে সময়ে এন্তা শহর কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন আর দেখভাল করতেন তার এলাকাও। তবে তিনি এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এন্তাজুল ইসলাম এন্তা বলেন, আমি কখনও জামায়াতের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। স্বার্থ হাসিল না হওয়ায় একটি মহল কুৎসা রটাচ্ছে।

নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার কারণে বাজার মৌজায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। দল শক্তিশালী হয়েছে।

তবে ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড কমিটি গঠনে নিজের সম্পৃক্ততা ছিল না জানিয়ে টুপামারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফি জানান, কমিটি গঠনের সময় আমাকে না জানিয়ে আগ্রহীরা প্রয়াত সভাপতিকে ম্যানেজ করে কমিটি নিয়েছেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ উপজেলা কমিটিতে করা হয়েছে।

জানতে চাইলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুজার রহমান লিখিত কোনো অভিযোগ না পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, যদি এমনটাই হয়ে থাকে তাহলে তার দায় ইউনিয়ন কমিটির। কারণ ওয়ার্ড কমিটি তারাই করেছেন।

বিষয়টি খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, যাতে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী আওয়ামী লীগে যোগ দিতে না পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা হবে।



মন্তব্য চালু নেই