জামায়াত নেতাকে ছাড়তে আ.লীগ সাংসদের সুপারিশ!
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলা থেকে জামায়াত নেতার নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাংসদ দবিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ১৬ নভেম্বর পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে একটি আবেদনপত্রে ওই সুপারিশ জমা দেওয়া হয়। এতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারাও সই করেছেন।
ওই জামায়াত নেতার নাম মো. শামসুজ্জামান। তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা (পশ্চিম) জামায়াতের আমির। বর্তমানে জামিনে আছেন তিনি। তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেন জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাংসদ বলেন, ‘আমি কখনো মামলা থেকে কোনো জামায়াত নেতাকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করিনি। আবেদনপত্রে আমার যে সই দেখা যাচ্ছে, তা আমার নয়। আমাকে বিতর্কিত করার জন্য কেউ আমার সই-সিল জাল করে এ কাজটি করেছে।’
এদিকে গত বুধবার শামসুজ্জামানের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা একটি আবেদনপত্র ঠাকুরগাঁও শহরে ছড়িয়ে পড়ে।
ঠাকুরগাঁওয়ের এসপির কাছে আবেদনটি করেছেন সদর উপজেলা ‘ঢোলারহাট ইউনিয়নের বাসিন্দারা’। আবেদনপত্রে সাংসদের সুপারিশ দেখা যায়। এ ছাড়া তাতে সুপারিশ আছে ঢোলারহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অখিল চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক হাসান মিয়াসহ বেশ কয়েকজনের।
মামলা থেকে জামায়াত নেতার নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ সম্পর্কে অখিল চন্দ্র রায় বলেন, আবেদনে দবিরুল ইসলামসহ কয়েকজনের সুপারিশ ছিল। এ কারণে তিনিও তাতে সই করেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহা. সাদেক কুরাইশী বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে জানি না। কেউ যদি এমন কাজ করেন, তবে তা হবে আওয়ামী লীগের নীতি-আদর্শের পরিপন্থী।
ঠাকুরগাঁওয়ের এসপি ফারহাত আহমেদ বলেন, মামলা থেকে জামায়াত নেতা শামসুজ্জামানের নাম বাদ দিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের স্বাক্ষর করা সুপারিশ পেয়েছেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘মামলা থেকে আমাকে অব্যাহতি দিতে এলাকার লোকজনই পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছে। সেখানে আওয়ামী লীগ সভাপতির সই কীভাবে এসেছে, তাঁরাই বলতে পারবেন।’
ওই মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটানোর পরিকল্পনা নিয়ে গত ১১ জুন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের কিসামত তেওয়ারীগাঁও গ্রামের লুৎফর রহমানের বাড়িতে ২০ থেকে ২৫ জন জঙ্গি বৈঠক করছিল। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। ওই বাড়ি থেকে বিপুলসংখ্যক জিহাদি বই, লিফলেট, চাঁদা আদায়ের রসিদ জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মর্তুজা বাদী হয়ে মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৫ আগস্ট ঠাকুরগাঁও শহর থেকে মো. শামসুজ্জামানসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মন্তব্য চালু নেই