জামায়াত দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাত বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সংগঠনটির ফর্ম হলো ত্রিভুজ আকৃতির। ত্রিভুজের মাথায় জামায়াতে ইসলাম লেখা। এর বাম পাশে ১৯২টি এনজিও, এক প্রান্তে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো, ‍আরেক প্রান্তে মৌলবাদী অর্থনীতি। তাই এখন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল।’

শনিবার (৩০ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. লিয়াকত হোসেন মোড়লের ‘দি ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ : ইজি অন কনটেম্পোরারি ইস্যু’ ও ‘রিফর্মস এন্টিসিডেন্টস অ্যান্ড ইকোনমিক আউটকাম’ শীর্ষক দু’টি বইয়ের মোড়ক উন্মাচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা দুই ধরনের। একটি হলো ফ্রিডম ফাইটার বাই চয়েস। আরেকটি হলো ফ্রিডম ফাইটার বাই চান্স। অর্থাৎ, স্বেচ্ছায় মুক্তিযোদ্ধা, আর ঘটনাচক্রে মুক্তিযোদ্ধা। শহীদ জিয়া ঘটনাচক্রে মুক্তিযোদ্ধা। না হলে তিনি আব্দুল আলিমকে মন্ত্রী বানাতেন না। যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে পতাকা তোলে দিতেন না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় তিনি জড়াতেন না।’

বারকাত আরো বলেন, ‘১ জুলাই হলি আর্টিসানে হামলার ঘটনা ধারাবাহিক ৯টি হামলার অংশ। ২৭ জুন ইয়েমেনে বোমা হামলা, ২৮ জুন তুরস্কের বিমানবন্দরে হামলা, ১ জুলাই হলি আর্টিসানে হামলা, ২ জুলাই আফগানিস্তানে হামলা, ৩ জুলাই থাইল্যান্ডের মসজিদে বোম্বিং, ৪ জুলাই সৌদি আরবে ৩ দফা হামলা, সর্বশেষ ৫ জুলাই ফ্রান্সে হামলা। তাই আইএস কারা তৈরি করছে সেটা জানার জন্য সৌদি যেতে হবে না। ভার্জিনিয়া গেলেই জানতে পারবেন, কারা আইএস তৈরি করে। প্ল্যানার প্ল্যান দেন, আর সেই প্ল্যান বাস্তবায়ন করে এক্সিকিউটিভ। পরিকল্পনাকারী আর বাস্তবায়নকারীর মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি কেই কাউকে চেনেনও না।’

বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে এ বিশ্লেষক বলেন, ‘পরিবর্তন হয়ে ইউরোপ আমেরিকা থেকে এখন শিফট হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পথে। যার কেন্দ্রবিন্দু হবে চায়না। দক্ষিণ চীন সাগর বিশ্ব-বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। তাই এটাকে দখলের জন্য বিশ্ব মোড়লরা পিপাসু হয়ে আছে। এ দ্বীপ নিয়ে তারা পার্শ্ববর্তী ৫টি দেশকে দিয়ে মামলা করেছিল। ইতোমধ্যে তারা মামলায় জিতেছে। কিন্তু চায়না বলেছে, এ রায় তারা মানে না। এদিকে, চিনের মুসলমান অধ্যুষিত এলাকা উইগুরে আইএস রিক্রুট করছে ইউএস নেভি। রাশিয়ার তাতার মুসলিম এলাকায় ইউএস নেভি মুসলিম তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের স্টার তারকা ঘোষণা করেছে।’

আমেরিকানদের উদ্দেশ তিনি বলেন, ‘তারা ভিয়েতনামে যখন বোমা ফেলেছিল, তখন বলেছে, চিরস্থায়ী শান্তির জন্য বোমা ফেলা হচ্ছে। আজকে বাংলাদেশ ইস্যুতে তারা কী সব আজগুবি কথাবার্তা বলছে তা বোধগম্য নয়। আমেরিকা স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের বিরোধিতা করেছিল আজ কীভাবে আমাদের বন্ধু হলো? শত্রু কখনো বন্ধু হয় না। তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন।’

ড. বারকাত বলেন, ‘সরকারি তথ্য মতে, গ্রামের ৬০ শতাংশ মানুষ ভুমিহীন। অথচ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মূলশক্তি ছিলো গ্রামের ৯৩ শতাংশ মানুষ। যুদ্ধ করেছিল গ্রামের মানুষ, মুক্তিযুদ্ধের সুবিধা নেন শহরবাসী। ৩০ লাখ শহীদের ২৯ লাখ‍ই গ্রামের। এর মধ্যে ২৪ লাখ ভূমিহীন। এখনো গ্রামের ৬০ শতাংশ মানুষ ভূমিহীন থাকার পরও ২৫ শতাংশ দারিদ্র হয় কী করে? গরিবের অধিকারকে হত্যা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য ‍দিয়ে। কেননা, তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন- গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের জন্য তিনি কাজ করে যাবেন।’

কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইলের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন- কৃষি ব্যাংকের এমডি এমএ ইউসুফ, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন, বিআইবিএমর পরিচালক প্রফেসর ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জী, বিডিবিএল ব্যাংকের পরিচালক আব্দুস সালাম প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই