জাতিসংঘের বিবৃতিতে বিএনপি জোটের সমর্থন

রাজনৈতিক সহিংসতায় বাংলাদেশে প্রাণহানির ঘটনায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন উদ্বেগ জানিয়ে যে বিবৃতি প্রকাশ করেছে তাতে সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

জোটের নেতারা বলেছেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে জাতিসংঘ সহিংসতা বন্ধ এবং বিরোধী দল ও জনগণের মৌলিক মানবিক অধিকার রক্ষার যে আহ্বান জানিয়েছে- তাতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সমস্যাটি যে রাজনৈতিক এবং বিরোধী দলের কর্মসূচি পালনে বাধা প্রদান ও নির্যাতন থেকে উদ্ভুত তারা তা অনুধাবন করেছেন।’

শনিবার বিকেলে ২০ দলীয় জোটের পক্ষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা ফিরে আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে সব পক্ষকে সংঘাত বন্ধ করে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শ্যামদাসানি শুক্রবার জেনেভায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান দুই দল তাদের মতপার্থক্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে ব্যর্থ হওয়ায় রাজনৈতিক সহিংসতা যে মাত্রায় পৌঁছেছে তা উদ্বেগজনক।’

সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতায় বাংলাদেশে প্রাণহানির ঘটনার ‘নিরপেক্ষ ও কার্যকর’ তদন্তেরও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

রাভিনা শ্যামদাসানি বলেন, ‘সহিংসতার মাত্রা ইতিমধ্যেই বিশৃঙ্খলা ও হতাহতের ঘটনায় পৌঁছেছে; এতে আমরা উদ্বিগ্ন।’

জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা এই আহ্বানকে স্বাগত জানাই। তবে সহিংস ঘটনাবলীর নিরপেক্ষ এবং কার্যকর তদন্তের যে আহ্বান ক্ষমতাসীনদের প্রতি জানানো হয়েছে, সে ব্যাপারে আমাদের এবং দেশের জনগণের সংশয় রয়েছে। কারণ এই ভোটার-বর্জিত সরকার সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে চরম দলীয়করণের মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতা রক্ষার হাতিয়ারে পরিণত করেছে। এদের মাধ্যমে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও কার্যকর তদন্ত সম্ভব নয়।’

সহিংসতার জন্য ক্ষমতাসীনদের দায়ী করে বিবৃতিতে এও বলা হয়, ‘এমন পৈশাচিক কার্যকলাপ অতীতে আন্দোলনের নামে তারাই করেছে। সাম্প্রতিকালে তাদের দলভূক্ত সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আটক হলেও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষপদে এমন সব দলবাজ লোক বসানো হয়েছে যে, তারা এখন আইনকানুন এবং তাদের আওতা, পরিধি ও কর্তব্যের সীমারেখাও মেনে চলার ধার ধারছেন না।’

শুক্রবার রংপুরে পুলিশের আইজি ও র‌্যাবের ডিজি ‘রাজনীতিবিদদের মতো’ বক্তব্য দিয়েছেন উল্লেখ করে বিববৃতিতে বলা হয়, ‘তারা বিরোধী দল ও জনগণকে কঠোর ভাষায় হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। বিরোধী দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে কটুক্তি করে তারা ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক এজেন্ডার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।’

জোট নেতারা বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা এতোটাই দেউলিয়া হয়ে পড়েছে যে, এখন রাজনৈতিক সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের পথে না গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের রাজনীতির মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর যে সব কর্মচারির রাজনৈতিক খায়েশ রয়েছে আমরা তাদের উর্দি খুলে প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতির মাঠে নামার আহ্বান জানাচ্ছি।’



মন্তব্য চালু নেই