জর্ডানে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী
সদ্য বিলুপ্ত হওয়া ছিটমহলগুলো থেকে চলতি বছরের মধ্যেই প্রায় একশ শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডানে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে অন্যান্য অভিবাসন প্রক্রিয়ার মতো তাদেরকেও অল্প খরচে সে দেশে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়।
বুধবার রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়টির সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার এ কথা জানান। এসময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি উপস্থিত ছিলেন।
ইফতেখার হায়দার বলেন, ‘কয়েকদিন আগে সিটমহলবাসী আমাদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সেই সিটমহলবাসীদের জন্য আমরা একটি বিশেষ উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। সেটা হলো জর্ডানের গার্মেন্টস সেক্টরে পাঠানো। এক্ষেত্রে অন্যদের মতো অল্প পরিমাণে তাদের অভিবাসন ব্যয় হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কুড়িগ্রামের টিটিসি (প্রশিক্ষণ কেন্দ্র)-এ গার্মেন্টস ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। সেখানে প্রতিটি ব্যাচে প্রায় ৪০ জন করে ভর্তি হয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নেয়। এবার ওখানে যে ব্যাচটি ভর্তি হবে তারা সবাই বিলুপ্ত সিটমহলবাসী। এটা থেকে আমরা তাদের জর্ডানে পাঠানোর চেষ্ঠা করবো। এবছর ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে সাবেক সিটমহলবাসীদের টোটাল ব্যাচটাই জর্ডানে পাঠিয়ে দেয়া হবে। তবে আমরা চাই যে, এই বছরে সর্বনিম্ন ১০০ জনকে শুধুমাত্র সাবেক সিটমহল থেকে পাঠাতে।’
‘মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত অভিবাসন খরচের চাইতে অনেক প্রাইভেট এজেন্সি বেশি টাকা নিচ্ছে, এ ব্যাপারে আপানারা কি করছেন?’ জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘খরচ সবাই কম নেয়, তা আমরা বলছি না। যেমন সৌদি আরবের অভিবাসন খরচ মাত্র ১৭ হাজার ৪০০ টাকা। এই খরচে কি সবাই সৌদি আরব যাচ্ছে? যাচ্ছে না। কোনো কোনো জায়গায় এর ব্যত্যয় ঘটে। আমরা এসব অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে পাচ্ছি, তাদের বহিষ্কার করা হচ্ছে, লাইসেন্স বাতিল করা হচ্ছে। আবার তাদের টাকাও বায়েজাপ্ত করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু তাই না, মানুষ টাকা যেন বেশি না দেয়, সে জন্য সচেতনামূলক কাজও করছি আমরা। অনেক সময় যারা বিদেশে যায়, তারাও খরচ নিয়ে মিথ্যা কথা বলে। তাদের কাছ থেকে যদি বেশি নেয়াও হয়, তাহলে তারা আমাদের কাছে এসে কম করে বলে। শপথ করে তাদের কাছ থেকে জানতে চাইলেও তারা মিথ্যা কথা বলে। এক্ষেত্রে মিডিয়ারও বড় ভূমিকা আছে, যদি আপনারা সাধারণ মানুষকে সনচেতন করে দেন।’ তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে সেসব এজেন্সির বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো বলেও জানান তিনি।
এ সময় নারীকর্মী নির্যাতন নিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, ‘শুধু যে সৌদিতে নারী নির্যাতন হচ্ছে, তা ঠিক না। সারাবিশ্বে নারীকর্মীরা নির্যাতিত হচ্ছে। তবে এসব নির্যাতনের ঘটনা পার্সেন্টেজ অনুযায়ী হিসাব করলে বেশিকিছু পরে না। তবে এবার আমরা সৌদি সফরে গিয়ে দেশটির মন্ত্রীর সঙ্গে এসব নির্যাতন নিয়ে কথা বলেছি, তারা বিষয়টি এবার থেকে আরো গুরুত্বের সাথে দেখবেন বলেও আমাদের জানিয়েছেন।’
মন্তব্য চালু নেই