জমকালো উৎসবে বিয়ের আবহ
একদম পাক্কা আয়োজন। পথের দুই ধারে রঙিন কাগজ দিয়ে সাজসজ্জা। সেটি গিয়ে শেষ হয়েছে জমকালো তোরণের সামনে। সেখানে মালঞ্চভরা গোলাপ-গাঁদার পাপড়ি নিয়ে অপেক্ষমাণ অভ্যর্থনাকারী দল। কুয়াশা জড়ানো সকাল। বর-কনে দুই জোড়া। আট হাত এক করে তাঁরা এসে তোরণের সামনে নামলেন গাড়ি থেকে। তারপর যা হওয়ার তাই। ব্যান্ড পার্টির কানে তালা লাগানো বাজনা। ফিতা কেটে তারকাদম্পতি সুজানা-হৃদয় খান ও আজরা-সাজিদ প্রবেশ করলেন সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে। ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে তাঁদের বরণ করে নিলেন দুই সংগীতশিল্পী কনা ও নির্ঝর। শুরু হয়ে গেল পন্ডস-নকশা বিয়ের উৎসব।এই প্রথমবারের মতো গতকাল মঙ্গলবার বিয়ের সব অনুষঙ্গ একত্র করে ব্যতিক্রমী বিয়ে উৎসব অনুষ্ঠিত হলো সারা দিন ধরে। ইউনিলিভারের ব্র্যান্ড পন্ডস ও প্রথম আলোর মঙ্গলবারের ক্রোড়পত্র নকশা যৌথভাবে এর আয়োজন করে। উৎসবের মূল ভাবনা ছিল ‘বিয়ের বাজার দেশেই’। সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল দিনভর এই বর্ণাঢ্য উৎসব।
বলরুমের সামনের অংশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল। শেষ মাথায় ছোট্ট মঞ্চ। সম্প্রতি বিবাহিত তারকা দম্পতিদ্বয় সেখানে গেলেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। প্রথম আলোর ফিচার সম্পাদক সুমনা শারমীন এই উৎসব আয়োজনের উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের দেশেই এখন পোশাক-আশাক, গয়না, প্রসাধনী থেকে শুরু করে বিয়ের যাবতীয় অনুষঙ্গই পাওয়া যাচ্ছে। গুণে-মানেও এসব খুবই উন্নত। দেশেই বিয়ের বাজার করতে উৎসাহ দেওয়া এবং এক ছাদের তলায় বিয়ের যাবতীয় দরকারি জিনিসগুলো যেন পাওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতেই এই উৎসব।
এরপর দুই দম্পতি জানালেন তাঁদের প্রতিক্রিয়া। হৃদয়-সুজানা বলেন, ‘মাত্রই কিছুদিন আগে তাঁরা বিয়ে করেছেন। অনুষ্ঠান করাই হয়নি। এখানে যে এমন জমকালো বিয়ের উৎসব করা হয়েছে, আগে জানালে সবাইকে নিয়ে আসতাম।’ বিয়েতে দেশের পণ্যই তাঁরা কেনাকাটা করেছেন। অন্যদেরও দেশেই বিয়ের কেনাকাটা করার আহ্বান জানালেন তাঁরা। একই প্রতিক্রিয়া আজরা-সাজিদ দম্পতিরও। অনুষ্ঠানে বিয়ের গান ‘হলুদ বাটো মেন্দি বাটো’ গেয়ে শোনান নির্ঝর। কনা পরিবেশন করেন ‘আলতা হলুদ মেহেদি, কনে যেন আজ শাহাজাদি’।
এর মধ্যেই উৎসাহী দর্শকে ভরে গিয়েছিল বলরুমের সামনের জায়গাটি। তাঁরা স্টলগুলোয় ঘুরে ঘুরে খোঁজ নিয়েছেন কোথায় কী পাওয়া যায়, দরদাম, সুযোগ-সুবিধা কেমন এসব। কথা হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে। তাঁর ছোট মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। জানালেন, পত্রিকায় আগেই এই উৎসবের খবর পেয়েছেন। আয়োজনটি তাঁর কাছে খুবই ভালো এবং কাজের মনে হয়েছে। আরেক দম্পতিকে পাওয়া গেল, যাঁরা প্রায় ৩০ বছর জার্মানিতে প্রবাসী—মাহাবুবুর রহমান ও আফরোজা রহমান। কয়েক দিন আগে দেশে এসেছেন ছেলে পার্থ রহমান ও তাঁর বাগ্দত্তা সান্দ্রা রহমানকে নিয়ে। সান্দ্রা জার্মান। বিয়ে হবে দেশেই। তো এমন সময়, এমন আয়োজন তাঁদের কাছে অনেকটা মেঘ না চাইতেই জল পাওয়ার মতো।
সারা দিনই বিপুল লোকসমাগম ঘটেছে উৎসবে। তবে বিকেলের পর থেকে ছিল আক্ষরিক অর্থেই উপচে পড়া ভিড়। বিভিন্ন সময় এসেছিলেন তারকারাও। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নিরব, শবনম ফারিহা, ইমরান, অমৃতা, বাপ্পি, শায়নাসহ অনেকে। হোটেলে পুরো বিয়েবাড়ির আমেজ।
মন্তব্য চালু নেই