জবিতে মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে খাবার নিয়ে ছাত্রলীগের মারামারি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বিতরণ করা খাবার নিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের(জবি) শাখা ছাত্রলীগ। বুধবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মকা- নিয়ে সমালোচনা করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আলোচনা সভার পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যান্টিনে খাবার বিতরণ চলছিল। এ সময় জগন্নাথ ছাত্রলীগের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুমন ও ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মনিরুজ্জামান দীপুর মধ্যে খাবার নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নিলে উভয়পক্ষের অনুসারীরাও তাতে অংশ নেয়। পরে জগন্নাথ ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগ যেন আর খারাপ খবরের শিরোনাম না হয়। চট্টগ্রাম ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কর্মকা- নিয়ে সমালোচনা বেশি হচ্ছে। এ ছাড়া শিক্ষককে অস্ত্র ঠেকিয়ে টেন্ডার ছিনতাইয়ের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের ঘটনার ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এ অনুষ্ঠানে কয়েকজন শিক্ষক আছেন, জানি না তারা ভয়ে এসেছেন কিনা। কারণ এ শিক্ষকরাই জগন্নাথ ছাত্রলীগের নামে অভিযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ও আমার কাছে গিয়েছিলেন। যা দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনও ছাত্র রাজনীতির দখলে চলে গেছে। ছাত্রলীগ, আপনারা আচরণে ডিজিটাল না হয়ে, এ্যানালগই থাকুন। বড় বড় বিলবোর্ডে আপনাদের চেহারা পরিবর্তন করার দরকার নেই। সামনে এক, আর বিলবোর্ডে আপনাদের চেহারা এমন ডিজিটাল হয় যে চেনা যায় না। আপনারা বঙ্গবন্ধুর বই পড়ে শুদ্ধ রাজনীতি শিখুন।ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকায় বসে অনেকে দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল হওয়ার রঙিন স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু বাংলাদেশ ভারত না, আর দিল্লিও ঢাকা না। যাদের ৫০০ কর্মী নেই তারা যখন কেজরিওয়াল হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, তখন তাদের করুণা করতে ইচ্ছে হয়। আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে মানুষ চেনা যাচ্ছে। যারা সুন্দর কথা বলেন, তাদের মুখোশ উন্মোচিত হলে যে চিত্র দেখা যায়, তা আমরা দেখেছি।

বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল-অবরোধের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিআরটিসির ৪০টি বাস পোড়ানো হয়েছে, ভাঙচুর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। তারা আরব বসন্তের ধাঁচে আন্দোলন করতে চাইছে, কিন্তু তাদের ৫০০ কর্মীও মাঠে দেখা যায় না। তারা চোরাগুপ্তা হামলা, বোমাবাজি করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিশ্বজিৎ হত্যাকা-ের ইঙ্গিত দিয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেন, ‘ছাত্রলীগের অর্জনে প্রথম থাপ্পড় দিয়েছিল জগন্নাথ ছাত্রলীগ। এদের আচরণ দেখে মনে হয়, এরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্রলীগের আচরণ শেখেনি। এই প্রোগ্রামে আপনাদের কয়জন কর্মী আছে আর বাইরে থেকে কয়জন এসেছে তাও আমরা জানি।

আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের সংসদ সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যে আচরণগত ত্রুটির কথা উঠেছে, তা রাজনৈতিক শিক্ষার দুর্বলতা। রাজনীতির শিক্ষা গ্রহণ করে ছাত্রলীগ কর্মীদের শোধরাতে হবে। আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই