জঙ্গি দমনে বিশেষ অভিযানে নামছে পুলিশ
গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে একই কায়দায় একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। লেখক, প্রকাশক, ব্লগার থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত চাপাতির কোপে প্রাণ হারিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিদেশি নাগরিক, ভিন্ন মতাবলম্বী বেশ কজন। এসব ঘটনার বেশিরভাগেরই দায় স্বীকার করে বিবৃতি এসেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের নামে। তবে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে আইএসের কোনো অস্তিত্ব নেই।
দেশের মাটিতে আইএসের অস্তিত্বে সরকার বিশ্বাসী না হলেও, জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের মতো দেশীয় জঙ্গি সংগঠনের বিষয়ে সরকার ওয়াকিবহাল।
আর এসব বিষয় মাথায় রেখেই সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গিদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা, টার্গেট কিলিং ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে জঙ্গি দমনে বিশেষ অভিযানে নামছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন মিতু হত্যা, নাটোরে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ী সুনীল গোমেজ হত্যা ও ঝিনাইদহে গোপাল গাঙ্গুলী নামে এক পুরোহিত হত্যা।
মিতু ও পুরোহিত হত্যায় জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত মিতুর স্বামী এসপি বাবুল আক্তার জঙ্গিদমনে বিশেষ প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় পুলিশের যেসব ইউনিট জঙ্গি দমনে কাজ করে তারা বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে।
এ অভিযানে বিশেষ গুরুত্ব পাবে সেইসব জঙ্গিদের গ্রেফতারের বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জামিনে আছেন যারা। তাদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করা হবে।
চট্টগ্রামে এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. মোখলেছুর রহমান।
সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে পুলিশ সদস্যদের পরিবারের নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টি উঠে আসে। তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয় সদর দফতর। হেড কোয়ার্টার্স থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল রাখার কথাও জানায় পুলিশ সদর দফতর। বিশেষ করে যারা জঙ্গি দমনে কাজ করেছেন তাদের।
এদিকে, মঙ্গলবার রাজধানীর পল্লবী এলাকায় এক অভিযানে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের (সিটি) সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। এই দুইজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডে ও বগুড়ার শিয়া মসজিদে হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে দাবি পুলিশের।
এছাড়া রাজশাহীতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন বাগমারায় আহমদিয়া মসজিদে বোমা হামলাকারীর সহযোগী জেএমবি সদস্য জামাল উদ্দিন (২৮)।
মন্তব্য চালু নেই