জঙ্গিবাদে ‘জামায়াতের ইন্ধন, জড়িতরা যেকোনো সময় গ্রেপ্তার
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক ইন্ধনের তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দাদের এসব তথ্য প্রমাণ জামায়াত শিবিরের দিকে ইঙ্গিত করছে।’
সকালে রাজধানীতে ছাত্রলীগ উত্তরের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই হামলার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীদেরকে শনাক্ত হয়েছে, তারা যে কোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যাদেরকেই আমরা ধরেছি, জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই স্বীকার করেছে কোন না কোনো সময় বা এখনও জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত ছিল। তারা একই সঙ্গে জামায়াত শিবিরের সরাসরি ক্যাডার এবং জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গেও জড়িত।’
গত ১ জুলাই গুলশানের অভিজাত রেস্টুরেন্ট হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা করে ১৭ জন বিদেশিসহ ২০ জনকে খুন করে জঙ্গিরা্। আর পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ এ হত্যা করা হয় পাঁচ হামলাকারীকে। জীবিত উদ্ধার করা হয় ৩২ জন জিম্মিকে।
এই হামলার পর পর আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দায় স্বীকারের তথ্য পাওয়া যায়। তবে পুলিশ জানিয়েছে এই হামলার ঘটনায় জড়িত দেশীয় জঙ্গিগোষ্ঠী জেএমবি।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদের জামাতে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করে জঙ্গিরা। তবে মাঠে ঢুকেতে না পেরে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলা করে জঙ্গিরা। সেখানে নিহত হন দুই পুলিশ সদস্য, আহত হয় বেশ কয়েকজন।
এই হামলার পর পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, আর্টিজানে যারা হামলা করেছিল, কিশোরগঞ্জেও সেই একই গোষ্ঠী ছিল। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই গোষ্ঠী হলো নতুন জেএমবি। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন ও রাজনৈতিক কর্মীরা এতে যোগ দিয়েছে।
গত ২৬ জুলাই ঢাকার কল্যাণপুরে যে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে নয় জনকে হত্যা তরা হয়েছে সেটি এই নতুন জেএমবিরই ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।।
তিনটি ঘটনার পরপর এর পেছনে জামায়াত শিবিরের ইন্ধনের অভিযোগ করেছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আর্টিজান হামলার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পুলিশ যাদের নাম জানিয়েছে তাদের একজন মারজান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী ছিলেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
কল্যাণপুর জঙ্গি আস্তানায় প্রাণ হারানো যোবায়ের ইসলামও নোয়াখালী ছাত্র শিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
ছাত্রলীগের আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এসব হামলার পেছনে যারা ছিল, যারা অর্থদাতা, মদদদাতা বা যারা সহযোগিতাকারী তাদের সবাইকেই একে একে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং গ্রেপ্তারের মাধ্যেমে তাদের সবাইকে আইনের মুখোমুখি করা হবে।’
অনুষ্ঠানে টার্গেট আগস্ট শিরোনামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র নিয়ে লেখা এবং ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের জনসভায় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা নিয়ে নানা ধরনের লেখা ও আলোচচিত্র রয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই