জগন্নাথ হলে মহাসাড়ম্বরে সরস্বতী পূজার আয়োজন
রতিবছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে মহাসাড়ম্বরে বিদ্যা ও আরাধনার অধিষ্ঠাত্রী দেবী শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী পূজার প্রথমদিন রোববার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয় পূজার্চনা এবং ১০টায় হয় অঞ্জলি প্রদান। সন্ধ্যা ৬টায় হবে আরতি অনুষ্ঠান।
দ্বিতীয়দিন সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি বিশিষ্ট শিল্পীরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দু’দিনই জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণ সমাগত পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হবে। মধ্যরাত পর্যন্ত এ অনুষ্ঠান থাকবে আলোকসজ্জায় সজ্জিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোলাহলে হল প্রাঙ্গণ থাকবে মুখরিত।
এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০টিরও বেশি বিভাগ ও ইনস্টিটিউট জগন্নাথ হল চত্বরজুড়ে বিভিন্ন আইডিয়া ও থিমভিত্তিক প্রতিমা স্থাপন ও মঞ্চ নির্মাণ করেছে। জগন্নাথ হল উপাসনালয়ে হল প্রশাসনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজিত একটি পূজা ছাড়াও এই উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ থাকবে হলপুকুরে চারুকলা অনুষদের তৈরি বিশাল অবয়বের একটি প্রতিমা। এটি বাংলার লোক ঐতিহ্যের ‘ট্যাপা পুতুলের’ আদলে তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া হল জুড়ে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের বিদ্যার্থীরা তৈরি করেছে বিভিন্ন মোটিফের ওপর ভিত্তি করে প্রতিমা ও বিভিন্ন মেটাফোরিক্যাল মণ্ডপ। দৃষ্টিনন্দন এই আয়োজনে প্রতিফলিত হয়েছে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির শাশ্বত মহিমা এবং একই সময় রয়েছে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির কলাকৌশল ও বিজ্ঞানের সমন্বিত শিল্পরূপ।
জগন্নাথ হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার জানান, সরস্বতী পূজা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে হল প্রশাসন বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হলজুড়ে সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসির সদস্যরা আগত অতিথি ও পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রদানকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা দু’দিন ধরে হলের ভেতরে ও আশেপাশের এলাকায় টহল দেবে ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
তিনি আরো জানান, হল প্রাঙ্গণে সমাগত পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের চলাচল মসৃণ করার জন্য হল চত্বরের ভেতরে কোনো প্রকার গাড়ি ও বাইক চলাচল নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। হল চত্বরের ভেতরে অযথা জটলা দূর করার জন্য হলের নিরাপত্তা রক্ষী ও ছাত্রদের নিয়ে গঠিত স্বেচ্ছাসেবকরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাবে।
পূজোৎসবের প্রথমদিন সারাদিনই পুণ্যার্থীদেরকে বিভিন্ন রকমের প্রসাদ বিতরণ করা হবে। আগত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানো ও বিভিন্ন সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য হল প্রাধ্যক্ষের কার্যালয় ও হল চত্বরে অবস্থিত তথ্যকেন্দ্র সারাক্ষণ খোলা ও সক্রিয় থাকবে।
জগন্নাথ হল কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিদ্যার্থীদের শুভেচ্ছা ও পূজোৎসবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই