ছেলের জন্যই আজ আমি বদলে যাওয়া মানুষ: ইমরান হাশমি

বলিউডের ‘কিসার বয়’ হিসেবে খ্যাতি আছে তার। প্রথমদিকে করেছেন অত্যাধিক খোলামেলা আর যৌনতা নির্ভর ছবি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই সেইসব সিনেমায় হঠাৎ তাকে আর দেখা যায় না। এর কারণ জানালেন স্বয়ং অভিনেতা ইমরান হাশমিই!

ছয় বছরের একমাত্র ছেলেই বদলে দিয়েছে তার জীবন, ক্যারিয়ার। আসলে একমাত্র ছেলে অয়নের শরীরে মরণব্যাধী ক্যানসারের জন্যই বদলে গেছেন ইমরান হাশমি। তার প্রভাব পড়েছে তার ক্যারিয়ারেও। যে ইমরান হাশমি ফুটপাত, মার্ডার, জিহার, আশিক বানায়া আপনের মত যৌনাবেদনময়ী সিনেমা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, সেই হাশমিই ছেলের ক্যানসারের পর করতে থাকলেন ঘনচক্কর, অংলি, মিস্টার এক্স এবং হামারি আধুরি কাহিনীর মত অসাধারণ সব সিনেমা। আসলে ছেলের এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়াটাই ইমরান হাশমিকে ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ তৈরি করেছে।

নয় বছর হল ৩৬ বছর বয়সী ইমরান হাশমি বিয়ে করেছেন পারভীন শাহানিকে। তাদের ঘরে ছয় বছরের ছেলে অয়ন। গত দুই বছর ধরে একমাত্র ছেলেটি ক্যান্সার আক্রান্ত ছিলেন। একজন বাবার কাছে জীবনের এই সময়টা খুবই দুর্বিষহ। ইমরান হাশমিও বাবা হিসেবে এই অবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন, দুই বছর ধরে ছেলেকে নিয়ে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে স্ট্রাগল করে গেছেন। আর এই সময়টাকেই লিখিত আকারে বইয়ের মাধ্যেমে তার ভক্ত অনুরাগীদের জানাতে বই লিখেছেন তিনি। আসছে এপ্রিলে পেঙ্গুইন প্রকাশনা থেকে প্রকাশ পাবে বইটি।

বই প্রকাশের আগে ইমরান হাশমি বইয়ের প্রচ্ছদের ফার্স্টলুক প্রকাশ করলেন গতকাল। আর সেখানেই নিজের ক্যারিয়ারে একমাত্র ছেলের প্রভাব নিয়ে কথা বললেন হাশমি।

নিজের ছেলে সম্পর্কে ইমরান হাশমি বলেন, অয়নের নতুন জীবন প্রাপ্তি আমার জীবনকে সত্যিই বদলে দিয়েছে। সে আমাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচতে শিখিয়েছে। এবং আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে জীবনে আঘাত আসবেই। আর তা মোকাবেলা করতে জীবন থেকে পালিয়ে নয় বরং সম্মুখে থেকেই বাধা বিপত্তি প্রতিহত করতে হবে। বারবার পড়ে গেলেও উঠে দাঁড়াতে হবে। হয়তো আবার পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে কিন্তু পরাস্ত মনোভাব থাকলে চলবে না।

যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, যখন তার ছেলের ক্যানসারের চিকিৎসা চলছিল তখন নিজেকে কিভাবে শান্ত আর দৃঢ় রাখতে পারলেন। এমন প্রশ্নেরও জবাব দেন ৩৬ বছর বয়সী ইমরান হাশমি। ছেলেকে ক্যানসারের হাত থেকে বাঁচিয়ে তুলথে স্ত্রীর ভূমিকায় নাকি ছিল সবচেয়ে বেশী। এরজন্য তার স্ত্রী পারভীনের ব্যাপক প্রশংসাও করেন হাশমি।

তারচেয়ে তার স্ত্রী যে মানসিকভাবে ছেলের ক্যানসারের কথা শুনে মজবুত ছিলেন তা জানিয়ে ইমরান হাশমি বলেন, আমি মনে করি ইমোশনালি পুরুষের চেয়ে মেয়েরা অনেক এগিয়ে। আমরা যখন প্রথম অয়নের ক্যান্সারের কথা শুনি, তখন আমি কেঁদে অস্থির হয়ে গেলেও আমার স্ত্রীর চোখ দিয়ে একফোটা পানি পর্যন্ত বের হয়নি। এমনকি টানা দুই বছর ছেলের ক্যান্সারের চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে একবারও তাকে ভেঙে পড়তে দেখিনি। তার এই সাহসী পদক্ষেপই আসলে অয়নকে বাঁচিয়ে তুলেছে।



মন্তব্য চালু নেই