ছেলেকে দলে সুযোগ পাওয়াতে বিছানায় যেতে বাধ্য হয় মা!

লোধা কমিটি চলতি মাসের শুরুর দিকে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে বসেছিল । সেখানেই নিজের বক্তব্যে ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের বেশ কয়েকজন নির্বাচকের বিরুদ্ধে এই স্পর্শকাতর অভিযোগ আনেন শঙ্করনারায়ণ। ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর উপস্থিত না থাকলেও তাকে ই-মেইলে সকলের সভার বিবরণী পাঠানো হয়। সেই ইমেইল পরবর্তীকালে ফাঁস হয় যা ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস প্রথম প্রকাশ করে।

তরুণ ক্রিকেটারদের মায়েরা নির্বাচকদের সঙ্গে বিছানায় যেতে বাধ্য হয়েছিলেন’ ফাঁস হয়ে যাওয়া মেইল থেকে জানা যায়, শঙ্করনারায়ণ বলেছিলেন, যেকোনো মূল্যে ওপরে ওঠার স্বপ্নে বিভোর তরুণ ক্রিকেটারদের মায়েরা নির্বাচকদের সঙ্গে বিছানায় যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। এর বিনিময়ে সন্তান যাতে দলে সুযোগ পান তারা কেবল সেটাই চেয়েছেন। শুধু নির্বাচকদের দোষারোপ করেই ক্ষান্ত হননি শঙ্করনারায়ণ। তিনি আরো জানান, পুরো ব্যাপারটা বিসিসিআইয়ের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার জানা ছিল। কিন্তু তারা চেপে গেছেন। ফলে এই দায় বোর্ড কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিসিসিআইয়ের সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর ও সেক্রেটারি অজয় শিরকে। সংস্থাটির সেক্রেটারি নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, ‘লোধা কমিটির এমন অভিযোগ শুনে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এমন ঘটনার পর বিসিসিআই জরুরি ভিত্তিতে আবারো লোধা কমিটির সঙ্গে বৈঠক ডেকেছে। অনুরাগ ঠাকুর এবারে নিজেই বিষয়টির সুরাহা করতে চান বলে জানিয়েছেন।

ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন কেলেংকারির তথ্য দিলো লোধা কমিটি। বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) দূর্নীতি আর অনিয়ম তদন্তের দায়িত্বে থাকা এই কমিটি জানাচ্ছে, ক্রিকেটার নির্বাচনে ক্রিকেটারদের মায়েদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছিলো নির্বাচকরা!

গত নয় আগস্ট বিসিসিআইয়ের সাথে লোধা কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে ভারতীয় বোর্ডের নির্বাচকদের ধুয়ে দিয়েছিলেন লোধা কমিটির সচিব গোপাল শঙ্করনারায়ণ। সেদিন ভারতীয় সরকারে সংসদীয় সভা থাকায় বোর্ডের বৈঠকে ছিলেন না সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর।

তবে, গোপাল শঙ্করনারায়নের বক্তব্যের কপি তাকে মেইল করা হয়। আর সেই মেইলটা উদ্ধার করেছে শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় পত্রিকা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। সেখান থেকে জানা যায়, সেদিন মানে গত নয় আগস্ট শঙ্করনারায়ণ বলেছিলেন, ‘তরুণ উচ্চাকাঙ্খী ক্রিকেটারদের মায়েরা নির্বাচকদের সঙ্গে বিছানায় যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, যেন তাদের ছেলেদেরকে দলে জায়গা দেওয়া হয়।’

শঙ্করনারায়ণের দাবি, এসব ঘটনার সবকিছু জানতো বিসিসিআইয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। তারপরও এমন ঘৃণিত অনিয়মের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বোর্ড। তবে, নির্বাচকদের অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিসিসিআই অনুরাগ ঠাকুর এবং সেক্রেটারি অজয় শিরকে। উল্টো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লোধা কমিটির এমন অভিযোগে।

শিরকে বললেন, ‘বিসিসিআইয়ের সাবেক ও বর্তমান নির্বাচকদের উপর লোধা কমিটির সেক্রেটারির আনা অভিযোগে এতোটাই ক্ষুব্ধ ও কষ্ট পেয়েছি যে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম।’

এর আগে বিসিসিআই ও লোধা কমিটির বৈঠক বসে গত নয় আগস্ট। এর পরপরই এমন অভিযোগ সামনে আসার পর ফের বৈঠক ডেকেছে লোধা কমিটি। সর্বশেষ বৈঠকে অনুপস্থিত থাকা অনুরাগ ঠাকুর ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে তিনি থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই