ছিটমহলবাসীর নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসনের মনিটরিং

নীলফামারীর চার ছিটমহলেরর বাসিন্দাদের খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ প্রশাসন মনিটরিং করছে।

ইতোমধ্যে কয়েক দফায় জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন, জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হাসান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, ডিমলা থানার ওসি রুহুল আমীন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা ছিটমহল এলাকা পরিদর্শন করে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন।

ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের অভ্যন্তরে ভারতীয় ২৮নং বড় খানকি ছিটমহলের সাধারণ স¤পাদক মোফাজ্জল হোসেন জানান, আসলে যারা ছিটমহলে বসবাস করতেন তারা মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিল না। কোন সুযোগ সুবিধা পাওয়াতো দূরের কথা অপরাধ কর্মকা- ঘটলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা পেতাম না। থানায় অভিযোগ দিলেও তারা আসতো না ছিটমহল হওয়ার কারণে। তিনি বলেন, সাপের ছোবল থেকে রক্ষা পেতে আমার যেন গর্তে বাস করতাম।

একই ছিটমহলের সভাপতি যদুনাথ রায় বলেন, দীর্ঘ ৬৮বছরের অনিশ্চয়তা আজ আমাদের নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছে। আমরা যে কতটা উচ্ছ্বসিত তা বলে প্রকাশ করতে পারবো না।

তিনি জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পর আমাদের খোঁজখবর নিতে প্রশাসনের লোকজন এসেছিলেন। আমাদের পরামর্শ দিয়ে গেছেন, যাতে কোন ঘটনা ঘটলে জানানো হয়। এতে আমরা আনন্দিত।

টেপাখড়ি বাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন বলেন, ছিটমহলে বসবাসকারীদের প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করতে না পারলেও পরোক্ষভাবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এখন থেকে ছিট বলতে আর কিছু রইলো না। তারা আমার ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক।

ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমীন জানান, সরকারিভাবে ছিটমহলবাসীদের জরিপ কার্যক্রমের কোন নির্দেশনা আসেনি। কেউ যাতে প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ সুবিধা আদায় করতে না পারে সেজন্য ছিটমহলবাসীকে বলা হয়েছে যাতে আমাদের জানানো হয়। তিনি জানান, আদম শুমারি ও জমির পরিমাপ নির্ণয়ের জরিপ কার্যক্রম সরকারি নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ছিট এলাকাগুলোতে চালাতে দেওয়া হবে না।

গত সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ছিটমহলবাসী যেন কোন রকম সমস্যার সম্মুখীন না হন সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হাসান বলেন, ছিটমহলবাসীর খোঁজ খবর রাখতে ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসন কাজ শুরু করেছে। এলাকাগুলো পরিদর্শন করে সেখানে যাতে কোন রকম আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার চার ছিটমহল বড় খানকিবাড়ি খারিজা, তালুক বড়খানকি খারিজা, গীতালদহ ও জিগাবাড়ি ছিটমহলে ৯৩ একর জমির ওপর ১১৯টি পরিবার বসবাস করছে। চার ছিটমহলের ৪৯৬ জনসংখ্যার মধ্যে ২৫৮ জন পুরুষ এবং ২৪৮ জন নারী।



মন্তব্য চালু নেই