চড়ুই পাখিদের বাঁচাতে শেষ সঞ্চয় খরচ

চড়ুই পাখি বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের এক ব্যক্তি। মানুষের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা এই পাখিটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে তিল তিল করে জমানো নিজের সব সঞ্চিত অর্থ দিয়ে চড়ুইদের জন্য বাসা বানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। নিজের জমানো অর্থ থেকে ১০ হাজার রুপির বেশি খরচ করে চড়ুইয়ের বাসা বানিয়ে তা প্রতিবেশীদের মধ্যে বিলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বাসিন্দা ৪৬ বছর বয়সী চড়ুইপ্রেমী মহেন্দ্র সিং পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, নিজের এযাবৎকালের সঞ্চিত অর্থ থেকে ১০ হাজার রুপি ব্যয় করে তিনি চড়ুইদের কল্যাণে কিনেছেন ৫০টি নকল বাসা, যেসব বাসায় পরম সুখে বাস করতে পারবে চড়ুই পাখিরা। কাঠ দিয়ে তৈরি এই বাসাগুলো চড়ুই পাখিদের বসবাস উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি বাসার মধ্যে রয়েছে ৩ দশমিক ২ ফুট গভীর গর্ত। সেসব গর্তে নিশ্চিন্তে বাসা বানিয়ে থাকতে পারবে চড়ুই পাখিরা।

বাসাগুলো তৈরির পর মহেন্দ্র সিং পাখিদের বাঁচাতে তাঁর প্রতিবেশীরা যাতে বাসাগুলো নিজেদের বাড়িতে রাখেন, সেই আর্জিও জানিয়েছেন। মূলত মাটি থেকে প্রায় দুই মিটার উচ্চতায় রাখা হবে এই বাসাগুলো। এমন জায়গায় বাসাগুলো রাখা হবে, যাতে সেখানে সামান্য বাতাসে কোনোরকম দোলা না লাগে। আর এই বাসাগুলোতে এসে চড়ুই পাখিরা যাতে নিশ্চিন্তে বাসা বাঁধতে পারে, তার জন্য নিরিবিলি জায়গা দেখেই রাখা হবে বাসাগুলো।

মহেন্দ্র সিং জানান, একদিকে ভয়ংকর পরিবেশদূষণ, অন্যদিকে যথেচ্ছ ব্যবহার করা মোবাইল ফোন থেকে বিচ্ছুরিত ইলেকট্রোম্যাগনেটিভ সিগন্যালের কারণে কমে আসছে চড়ুইয়ের সংখ্যা। সে সঙ্গে পুরোনো দরদালানের ঘুলঘুলিতে চড়ুইয়ের বাসস্থান আজ ঝাঁ চকচকে ইমারতের দৌলতে অতীত।

ফলে অস্তিত্ব বাঁচানোর পাশাপাশি বাসস্থান সংকটেও আজ চড়ুই পাখিরা। সেখানে দাঁড়িয়ে চড়ুই পাখিদের এই বিশাল প্রতিকূলতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেঁচে থাকার লড়াইতে নিজের সামান্য সঞ্চয় নিয়ে অবশেষে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি।

এদিকে রাজ্যের বন বিভাগ থেকে মহেন্দ্রর এই উদ্যোগকে বাহবা জানানো হয়েছে। এই উদ্যোগ সফল করতে অনুদানের কথা ঘোষণা করেছে বন বিভাগ।



মন্তব্য চালু নেই