চোখের জলে হ্রাস পায় পুরুষের উত্তেজনা!

চোখের জলে রয়েছে এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ। গবেষণায় এমন তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বেদনার পরিণাম কান্না। আর এ কান্নায় রয়েছে এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ, যা সৃষ্টি করে এক ধরনের সঙ্কেত। যে সঙ্কেতের প্রভাবে কমে যায় পুরুষের হরমোন টেস্টোস্টেরোনের মাত্রা। ফলে হ্রাস পায় যৌন উত্তেজনা।

চোখের জল নিয়ে গবেষণার এ রকম সব ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স’ জার্নালে। ইসরাইল ওয়েজমান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এবং এডিথ ওয়ালফসন মেডিক্যাল সেন্টারের আট জন বিজ্ঞানী ওই পত্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রবন্ধটি পাঠিয়েছেন। যার শিরোনাম ‘হিউম্যান টিয়ারস কনটেন এ কেমোসিগনাল’।

‘অশ্রম্ন’র বিভিন্ন রকম রয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে অনেকের ভুল ধারণা আছে। পেঁয়াজ কাটতে বসলে চোঁখ যে জলে ভিজে যায়, তার উপাদান অপমান বা শোকের প্রতিক্রিয়াজাত অশ্রম্নর মতো নয়। বেদনাশ্রম্নর আসল কাজ কী, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা সংশয়ে ছিলেন বহুকাল। গবেষণায় দেখা গেছে, ইঁদুরের চোখের জলে রয়েছে সঙ্কেতমূলক রাসায়নিক পদার্থ বা ‘কেমোসিগনাল’_ যার প্রভাবে অন্য ইঁদুরের আচরণ বদলে যায়।

মানুষের চোখের জলেও কি আছে তেমন রাসায়নিক সঙ্কেত? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে মহিলাদের উপরে পরীৰা চালিয়েছিলেন ইসরাইলী গবেষকরা। বেশ কিছু মহিলাকে দেখতে বসিয়েছিলেন খুবই দুঃখের ঘটনা-সংবলিত সিনেমা, যা দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন ওই মহিলারা। সেই বেদনাশ্রম্ন ধরে রেখেছিলেন টেস্টটিউবে। এর পর ওই মহিলাদেরই গাল বেয়ে নেমে আসা লবণাক্ত জলও সংগ্রহ করেন বিজ্ঞানীগণ। দু’রকম জলেরই প্রভাব লৰ্য করেন দু’দল পুরম্নষের উপর। দেখা যায়, পুরম্নষেরা লবণাক্ত জলের বদলে বেদনাশ্রম্ন শুঁকেছেন, তাঁরা মহিলাদের ছবি দেখার সময় তাঁদের যৌন আবেদন কম বল মনে করছেন। এমন কি ওই পুরম্নষদের দেহে হরমোন টেস্টোস্টেরোনের মাত্রাও কমে যাচ্ছে।

বেদনাশ্রম্নর প্রতিক্রিয়া আরও ভাল করে পরীৰা করার জন্য বিজ্ঞানীরা এর পর আরও এক পদ্ধতি অবলম্বন করেন। যে পুরম্নষেরা শুঁকেছেন বেদনাশ্রম্ন, তাঁদের বসিয়ে দেন দুঃখের সিনেমা দেখতে। আর তাঁদের মাথার সাথে যুক্ত করে দেন ‘ম্যাগনেটিক রেসোন্যান্স ইমেজিং’ (এমআরআই) যন্ত্র। যে যন্ত্র পরীৰা করে মসত্মিষ্কের বিভিন্ন অংশে ক্রিয়াকলাপের তারতম্য। শেষ পরীৰায় ইসরাইলী বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মসত্মিষ্কের যে সব অংশ যৌন উত্তেজনার জন্য চিহ্নিত, সেই সব দিকে কিছুটা ঝিমোনো ভাব। অর্থাৎ, চোখের জলে রয়েছে এমন কোন রাসায়নিক পদার্থ, যার প্রভাব পড়ে মনের উপর। এ পরীৰা কেবলমাত্র মহিলার চোখের জল নিয়ে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরম্নষ এবং শিশুর বেদনাশ্রম্নতেও ‘কেমোসিগনাল’ আছে কি-না, তা এখনও প্রমাণিত হয়নি। তবে, তা থাকার সম্ভাবনা যে খুবই বেশি, সে কথা জানিয়েছেন গবেষকদলের নেতা অধ্যাপক নোয়াম সোবেল। আর এক গবেষক সাগিত সুসান জানিয়েছেন, ‘আমরা এ বার নামছি পরীৰার দ্বিতীয় ধাপে। শিশু এবং পুরম্নষের বেদনাশ্রম্ন নিয়ে গবেষণা তো হবেই। এ ছাড়া, আমরা জানতে চাইছি বেদনাশ্রম্নর মধ্যে উপস্থিত কেমোসিগনালটির রাসায়নিক গঠনও। এটা জানলে সঙ্কেতের কাজকর্ম আরও ভাল করে বোঝা যাবে।’

বিদেশী পত্রিকা অবলম্বনে



মন্তব্য চালু নেই