চোখের জন্য কখন চশমা জরুরি

নিজের আশপাশে একটু তাকিয়ে দেখুন তো। কী দেখলেন? অনেকের চোখেই শোভা পাচ্ছে চশমা, তাই না? জীবনযাত্রার বিভিন্ন আঙ্গিকের কারণেই আজকাল কম বয়সেই অনেকের চশমা দরকার হচ্ছে। চশমা দরকার কি না, তা আসলে চোখের চিকিৎসকের কাছে গিয়েই নিশ্চিত হওয়া ভালো। তবে কিছু কিছু লক্ষণ দেখে আপনিও আন্দাজ করে নিতে পারবেন আপনার চশমা নেয়ার সময় এসে গেছে কিনা। চলুন দেখে নেই এসব লক্ষণ।

আপনি কম্পিউটারের সামনে ঝিমুতে থাকেন
আমাদের চোখের পেশীগুলো সবচাইতে বেশি ক্লান্ত হয় তখনই যখন আমরা খুব কাছে থেকে কোনোকিছু দেখি এবং খুঁটিনাটিগুলোর ব্যাপারে মনোযোগ দেই- যেটা কম্পিউটারে কাজ করার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। আপনার দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে এসব পেশীর কাজ আরো বেড়ে যায়। এসব পেশীর ক্লান্তির কারণে আপনার ঘুম পায়। যদি আপনি চশমা নেন এবং এর পরেও আপনার চোখ ক্লান্ত হয়ে যায়, তাহলে মনিটর একটু দূরে রেখে কাজ করুন এবং ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলুন।

পড়ার জন্য উজ্জ্বল আলো দরকার হয় আপনার
সাধারণ রিডিং ল্যাম্পের আলোয় যদি আপনি বই পড়তে না পারেন, যদি আরো কয়েকটা লাইট জ্বালাতে হয় তাহলে চিন্তার কারণ আছে বই কী। বিশেষ করে আগে কম আলোয় পড়তে পারতেন, এখন বেশি আলো দরকার হয় তবে সেটা ভালো কথা নয়। এটা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিতে পারে। গবেষণায় দেখা যায়, ২০ বছর বয়সী মানুষের তুলনায় ৬০ বছর বয়সী মানুষের প্রায় তিন গুণ আলো দরকার হয়।

বই পড়তে গেলে আপনার হাত ব্যথা হয়ে যায়
অদ্ভুত কথা তাই না? কিন্তু ভাবুন, হাতে ধরে বই পড়ার সময়ে কি আপনি চোখের খুব কাছে এনে বই পড়েন এবং হাত ব্যথা হয়ে যায় সহজেই? অথবা চোখ থেকে খুব দূরে ধরে রেখে বই পড়তে হয়? দুই ক্ষেত্রেই আপনার চশমা দরকার হতে পারে।

যখন তখন মাথাব্যথা হচ্ছে আপনার
একটানা অনেকক্ষণ ধরে কাজের ফলে চোখের ওপর অনেক চাপ পড়ে। এই চাপ থেকে সহজেই মাথাব্যথা হতে পারে আপনার। অথবা মাথাব্যথা থাকলে সেটাকে আরো তীব্র করতে পারে। চোখের ঠিক পেছনে ব্যথা করলে এর কারণ হতে পারে হাইপারওপিয়া বা অ্যাস্টিগমাটিজম। এই দুটি সমস্যাই চশমা ব্যবহারে ঠিক করা যায়। এই মাথাব্যথার শিকার হতে না চাইলে আপনি কাজ করার সময়ে ছোট ছোট বিরতি দিন। চিকিৎসকরা ২০-২০-২০ নিয়ম অনুসরণ করতে বলেন। কাজ করার সময় প্রতি ২০ মিনিট পর পর কমপক্ষে ২০ ফুট দূরের কোনো কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকুন ২০ সেকেন্ড। এছাড়াও মাথাব্যথা দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন।

আপনি শাকসবজি খান না
চোখ ভালো রাখার জন্য গাজরই একমাত্র সবজি নয়। অন্যান্য শাকসবজিও আপনার খাওয়া জরুরি। বিশেষ করে সবুজ শাক খাওয়াটা প্রয়োজনীয়। এসব খাবারে থাকে লুটেইন এবং জিয়াজ্যান্থিন। এগুলো হলো, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার চোখের লেন্স পরিষ্কার রাখে, ছানির সম্ভাবনা কমায় এবং চশমার প্রয়োজনীয়তা দূরে রাখে।

আপনি আলোর ছটা দেখতে পান
যে কোনো বাতির দিকে দৃষ্টি দিলে তাকে ঘিরে একটি আলোর ছটা বা Halo দেখতে পান আপনি। এছাড়াও মনে হয় সেই আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে অথবা ম্লান হয়ে যাচ্ছে। লাইট বাল্ব থেকে গাড়ির হেডলাইট পর্যন্ত এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলুন কারণ ছানির একটি লক্ষণ হতে পারে এই ব্যাপারটা।

আপনার বয়স ৪০ এর উপরে
‘৪০ পেরোলেই চালশে’ গানটা মনে আছে? খুব একটা মিথ্যে নয় কথাটা কারণ এই বয়সে এলে ওপরে উল্লেখ করা উপসর্গগুলো আপনার জীবনে আসতেই পারে। ৪০ থেকে ৬০ পর্যন্ত খারাপ হতে থাকবে আপনার দৃষ্টিশক্তি। যে কারণে আপনার চশমা লাগতে পারে।

আরও কিছু উপসর্গ আছে যা থেকে বোঝা যেতে পারে আপনার চশমা দরকার-

রাত্রে দেখতে সমস্যা হওয়া

অন্ধকার থেকে আলোতে এলে দেখতে সমস্যা হওয়া

একটি জিনিসকে দুইটি দেখা

চলতে ফিরতে ধাক্কা খাওয়া, হোঁচট খাওয়া।



মন্তব্য চালু নেই