চেহারায় অকালে বয়সের ছাপ প্রতিরোধে যা করবেন
আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে চেহারাতেও বয়সের ছাপ পড়ে থাকে। তবে খাবারে কিছু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে এ ছাপ পড়ার হারকে বিলম্বিত করা যায়। ফলে ত্বকের বলিরেখাও সহজে পড়ে না। ত্বককে টান টান করে ধরে রাখতে সাহায়তা করে কোলাজেন নামক যে প্রোটিন,বয়স বাড়তে থাকলে যা ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে। ফলে ত্বক পাতলা ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। চামড়ার যে স্থিতিস্থাপকতা সেটি আসে ইলাস্টিন থেকে এবং সেটি আর্দ্রতা ধরে রাখতেও সহায়তা করে। বয়স বাড়ার প্রতিক্রিয়ায় এই দুটি উপাদান ক্ষয় হয় বা পরিমাণে হ্রাস পায়। এর ফলে ত্বকে দেখা দেয় শুষ্ক ভাব, গড়ে উঠে ভাঁজ- যাকে সাধারণভাবে বলিরেখা বলা হয়ে থাকে। তবে কেবল বয়সের কারণেই যে বলিরেখা পরে, সেটাও নয়। অসুস্থতা, পরিবেশ দূষণ, ধূমপান, মদ্যপান, রোদে সুরক্ষা ব্যবহার না করা, অস্বাস্থ্যকর ডায়েট, এলোমেলো জীবন যাপন ইত্যাদি অনেক কিছুই তরান্বিত করে ত্বকে বলিরেখার আগমনকে।
যেভাবে দূরে রাখবেন বয়সকে
বলিরেখার প্রকোপ থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন প্রসাধন, রূপচর্চা, পার্লার ট্রিটমেন্ট ইত্যাদি আরও কত কিছুই করে থাকেন পৃথিবী জুড়ে নারী পুরুষেরা। কিন্তু মজার ব্যাপারটা কি জানেন, এই বলিরেখা ঠেকাবার খুব সহজ একটা কৌশল লুকিয়ে আছে আপনার নিত্য দিনের খাবার মাঝেই।
দৈনিক খাদ্য তালিকায় যোগ করে নিন কিছু খাবার, দেখবেন বলিরেখা দীর্ঘদিন দূরে থাকবে আপনার ঝলমলে চেহারা থেকে। বলিরেখা ঠেকাতে পারে যা, তার নাম অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। সুতরাং বলিরেখা থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে সেই সকল খাদ্য বেছে নিতে হবে যাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে প্রচুর পরিমাণে। দেয়া হলো সেই সকল খাবারেরই তালিকা-
১. নিয়মিত অভ্যাস করুন তাজা ফল খাবার। ক্যারোটিনসমৃদ্ধ ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যেমন- পাকা কলা, পাকা পেঁপে, পাকা আম, পাকা পেয়ারা, লাল তরমুজ, বেদানা ইত্যাদি। বেছে নিন ক্যারোটিন সমৃদ্ধ রঙিন ফল।
২. শাকসবজিতেও থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আমাদের একান্ত পরচিত সবজি গুলোই, যেমন-পালংশাক, লাউশাক, ঢেঁড়স, গাজর, বাঁধাকপি, পাকা কুমড়া, টমেটো, ক্যাপ্সিকাম ইত্যাদিতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ক্যান্সার প্রতিরোধকারী লাইকোপিন নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় টমেটো এবং তরমুজে। ত্বকের সুস্থতা এবং সজীবতা ধরে রাখতে টাটকা শাকসবজি এক অব্যর্থ ওষুধ। শসাও উপকারী তারুণ্য ধরে রাখতে। আছে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ই’ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড।
৩. ডাবের পানি খাবার অভ্যাস করুন কোমল পানীয়ের পরিবর্তে। ডাবের পানি তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়ক।
খান দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার। যেমন দই, ছানা, পনির ইত্যাদি। ডিমও রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়।
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খান। আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত যে ক্ষয় হয়, বয়সের যে পরিবর্তন আসে তা মূলত অক্সিডেশনের জন্য। ভিটামিন সি’তে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা কোষাবরণকে মজবুত করে, সহজে ভেঙে যেতে দেয় না। লেবু, কাচা মরিচ, টক জাতীয় যে কোনও ফল ভিটামিন সি এর চমৎকার উৎস।
৪. রোজ খান বাদাম জাতীয় ফল। চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, কাঠ বাদাম, পেস্তা বাদাম, আখরোট ইত্যাদি বাদাম খুবই উপকারী বলিরেখা ঠেকাতে। এগুলো ‘ই’ সমৃদ্ধ। চামড়া মসৃণ রাখতে কাজে আসে অনেকখানি।
বেরি জাতীয় রসালো ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা চামড়ার জন্য উপকারী। যেমন স্ট্রবেরি, আঙ্গুর ইত্যাদি। কিসমিসেও তাই মিলবে এই পদার্থ
৫. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এর সমৃদ্ধ উৎস হিসেবে সবুজ চা অতুলনীয়। দৈনিক অন্তত ২ কাপ সবুজ চা বা গ্রিন টি পান করুন।
৬. সকালে খালি পেটে ঘৃতকুমারীর রস পান করুন। এতে চামড়ার ভাঁজ কমে আসে।
৭. তিল ও সূর্যমুখীর বীজেও আছে প্রচুর ভিটামিন ই। নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন। মাংস খাওয়া পরিহার করুন। বদলে মাছ খান প্রচুর পরিমাণে।
মন্তব্য চালু নেই