চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় বাংলাদেশ
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চীনের বাজারে বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশের সুবিধা চায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সফররত চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রস্তাব করেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-চায়না বিজনেস ফোরামে বক্তব্যকালে তিনি এ কথা জানান।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চীনা রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে ২৬টি বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, চীন বিশ্বের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ। তা আঞ্চলিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে। সেই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আমাদের দেশে এসেছেন এটা বড় অর্জন। তার এ সফরে দুই দেশের মধ্যে মোট ২৬টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এটি আমাদের জন্য ইতিবাচক। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমু্ক্ত ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধার প্রস্তাব করেছেন। ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ ক্ষেত্রে চীনের রাষ্ট্রপতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে প্রধানমন্ত্রী এ প্রস্তাব করেছেন বলে বাণিজ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যঘাটতি এখন প্রায় ৮৮৪ কোটি ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ চীনে রফতানি করেছে ৮০ কোটি ৮১ লাখ ডলারের পণ্য। অন্যদিকে চীন বাংলাদেশে রফতানি করেছে ৯৬৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-চায়না বিজনেস ফোরামের বৈঠক শেষে চীনের ১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের ১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি হবে। এর ফলে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বন্ধুত্ব আরো দৃঢ় হবে।
বৈঠকের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। চীনের প্রতিনিধিদলের এই সফর সেই সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নেবে।
বৈঠকে চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের ভাইস চেয়ারম্যান চেন ঝো বলেন, টেক্সটাইল, অটোমোবাইল, যন্ত্রাংশ, জাহাজ নির্মাণ, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে চীনের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।
বিকেলে শুরু হওয়া এই বৈঠকটি চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে দুই দেশের ১৫টি প্রতিষ্ঠান পরস্পরের সঙ্গে চুক্তিপত্রে সই করেন।
মন্তব্য চালু নেই