চীনের প্রভাব ঠেকাতেই কি ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঢাকা সফর?

ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহার পার্রিকারের বাংলাদেশ সফর নিয়ে এপর্যন্ত বাংলাদেশের দিক থেকে খুব সামান্যই জানা গেছে।তিনি হচ্ছেন দ্বিপাক্ষিক সফরে বাংলাদেশে যাওয়া প্রথম ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।

ভারতীয় গণমাধ্যমে এই সফর নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। বেশিরভাগ সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে চীনা অর্থনৈতিক এবং সামরিক প্রভাব যেভাবে বাড়ছে, তাতে ভারত উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে সম্প্রতি চীন বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে দুটি সাবমেরিন দেয়ার পর বিষয়টি ভারতকে বেশ ভাবনায় ফেলেছে বলে মনে করছে ভারতীয় গণমাধ্যম।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া গত ১৫ই নভেম্বর মনোহার পার্রিকারের বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে যে রিপোর্ট প্রকাশ করে, তার শিরোনাম ছিল “টু কাউন্টার চায়না, গভর্ণমেন্ট রাশিং ডিফেন্স মিনিস্টার মনোহার পার্রিকার টু বাংলাদেশ।” অর্থাৎ চীনের প্রভাব মোকাবেলায় ভারত সরকার তড়িঘড়ি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহার পার্রিকারকে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, মিস্টার পার্রিকারের এই সফরের লক্ষ্য বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা তৈরি করা। সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ঐ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, এই সফরের সময় একটি নতুন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা কাঠামো নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে থাকবে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, প্রশিক্ষণ এবং যৌথ মহড়া এবং সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সহযোগিতা।

ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই বলছে, মিস্টার পার্রিকারের এই সফরের সময় দুদেশের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির বিষয় চূড়ান্ত করা হবে। ডিসেম্বরের শেষের দিকে যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যাওয়ার কথা, সেসময় এই চুক্তিটি সই হতে পারে। তবে পিটিআই বলছে, বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে সম্প্রতি যে দুটি সাবমেরিন পেয়েছে, তার সঙ্গে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এই সফরের কোন সম্পর্ক নেই।

উল্লেখ্য দু সপ্তাহ আগে চীনের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ পেয়েছে বাংলাদেশ।

আগামী বছরের শুরুতে ‘বানৌজা নবযাত্রা’ এবং ‘বানৌজা জয়যাত্রা’ নামে এই সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হবে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য তৈরি করা ০৩৫ জি ক্লাসের এই কনভেনশনাল সাবমেরিন দুটি টর্পেডো এবং মাইন দ্বারা সু-সজ্জিত, যা শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন আক্রমণ করতে সক্ষম।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করছে যে, চীন বাংলাদেশকে যেধরনের বিপুল অর্থনৈতিক এবং সামরিক সহায়তা দিচ্ছে, তার সঙ্গে টক্কর দেয়ার সক্ষমতা তাদের নেই।

মধ্য অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যখন বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন, তখন আড়াই হাজার কোটি ডলারের ২৭টি চুক্তি হয়েছিল। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “চীনের এই অর্থনৈতিক পেশিশক্তি সঙ্গে যেমন টক্কর দেয়ার সক্ষমতা ভারতের নেই, তেমনি চীনের মত বিকশিত সামরিক শিল্প ভিত্তিও ভারতের নেই।” বিবিসি বাংলা



মন্তব্য চালু নেই