‘চাষ উপযোগী জমি সংরক্ষণ করতে হবে’
বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্যের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সরকারের নীতিই হচ্ছে বাংলাদেশকে উন্নত করা। সুখী, সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করা।
শনিবার (০৫ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১২টার দিকে জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশে ধনী-গরিবের বৈষম্য হ্রাস পেয়েছে। আমাদের সরকারের নীতিই হচ্ছে বাংলাদেশকে উন্নত করা। সমবায়কে বহুমুখী সমবায় হিসেবে গড়ে তোলা। দেশের উন্নয়ন করতে হলে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে, তবেই হবে মূল উন্নয়ন।
কৃষি জমি নষ্ট করে কারখানা নয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, চাষ উপযোগী জমি সংরক্ষণ করতে হবে, পণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আর শিল্প কারখানা হবে নির্দিষ্ট জায়গায়। এ জন্য আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো গড়ে তুলেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে পাঁচ বছর মেয়াদী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা হতে নিয়েছিলেন। সেটা যদি বাস্তবায়ন করতে পারতেন তাহলে বাংলাদেশ ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত দেশে পরিণত হতো। তিনি সম্মিলতিভাবে চাষ করার ধারণা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। উৎপাদিত ফসলের ভাগ মালিক পাবে, শ্রমিক পাবে আর সমবায় একটা ভাগ পাবে।উৎপাদনের মাধ্যমে সকলের সমন্বিত চেষ্টা থাকবে। কাজেই এতো জনসংখ্যার আমাদের এই দেশে উন্নয়ন করতে গেলে সম্মলিতিভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, এখনও উৎপাদিত ফসল কিন্তু ভাগ হয়। তবে বিশাল জায়গা যেন অনুৎপাদিত না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশকে উন্নত করতে কাজ করে যাচ্ছি। এ লক্ষ্যে সময়বায়কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা চাই এই দেশ শোষণ, বঞ্চনা থেকে মুক্তি পাক। এ জন্য সমবায়ের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যেমন আশ্রায়ন। যাতে যৌথভাবে বসবাস, যৌথভাবে চলাচল করতে পারে দেশের মানুষ।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জাতির পিতার মতো বৃহৎ আকারে না হলেও ক্ষুদ্র আকারে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। দরিদ্র বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য হাঁস-মুরগির খামার, হস্তশিল্প, সেলাই, ব্লক-বাটিক, পশুপালন, মৎস চাষ ও কুটির শিল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে উন্নত জীবনের অধিকারী হবে এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন।
তিনি বলেন, আমরা ১০০টি শিল্প অঞ্চল গড়ে তুলতে যাচ্ছি।পরিকল্পিতভাবে এটা করা হচ্ছে। এখানে সেখানে শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে গ্যাস বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো কঠিন হয়। তাই পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠলে সেখানে অনেক সুবিধা হয়। শিল্পাঞ্চলে ক্ষুদ্র -বৃহৎ ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলা হবে। সে অঞ্চলে কাঁচামাল কিংবা উৎপাদিত মালামাল সরবরাহ সহজ হবে, রফতানি সহজ হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সেই সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করব। এখন মোবাইল ফোনে থ্রিজি চালু হয়েছে। ফোরজিও চালু হবে। অনলাইনে এখন কোরবানির গরুও মানুষ কিনতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব সমাজের উন্নয়নে অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত এবং শিক্ষিত যুবকদের বিভিন্ন ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। পশু পালন, মেকানিক্স, ক্যাটারিং, ড্রাইভিং, ব্লক বাটিক, সেলাই ইত্যাদি। একইসঙ্গে কোন দেশে কোন ধরণের লোকের চাহিদা বেশি সেদেশে সেভাবে লোক পাঠানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের সমবায় সম্প্রসারণের বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সমবায়ের অধীনে। যাদের ভিটামাটি আছে কিন্তু ঘর করবার ক্ষমতা নাই্। তাদেরকে টাকা দেওয়া হয় বা ঘরবাড়ি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। শিল্প কারখানার শ্রমিকদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান এ ধরণের সাহায্য চাইলে তা করে দেওয়া হচ্ছে। হোস্টেল বা ডরমেটরি নির্মাণ করে দিতে পারি।
আমরা এ কারণে মাত্র ২ শতাংশ সুদ নিব। এনজিও করলে ৫ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারবে না। সে নিয়ম করা হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই