চামড়া ঠেকাতে ট্যানারিতে পুলিশ পাহারা

সরকার ও প্রশাসনের দফায় দফায় আলটিমেটাম, হুমকি, সতর্কতা্- কোনো কিছুই ঢাকার হাজারীবাগের অনেক ট্যানারিকে টলাতে পারেনি। ফলে ট্যানারির প্রধান কাঁচামাল চামড়ার প্রবেশ ঠেকাতে বসানো হয়েছে পুলিশি পাহারা। কোনো চামড়া ঢুকতে পারছে না হাজারীবাগের ট্যানারিতে।

কয়েক দফা আলটিমেটামের পরও ট্যানারিগুলো সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে না সরানোয় কয়েক দিন আগে নৌমন্ত্রী শাজাহান ঘোষণা দেন, ৩১ মার্চের পর হাজারীবাগে চামড়া ঢুকতে দেয়া হবে না। সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার পুলিশি পাহারা বসানো হয়।

হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আলিমুজ্জামান বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “আজ এই এলাকায় কোনো চামড়া ঢোকেনি।”

তবে শুক্রবার বলে বেশির ভাগ চামড়া কারখানা বন্ধ। এ ছাড়া সাভারে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে বন্ধ রাখা হয়েছে কিছু ট্যানারি। সরেজমিন ঘুরে কয়েকটি ট্যানারিতে কাজ চলতে দেখা যায়।

এসব কারখানার শ্রমিকদের কাছ থেকে জানা যায়, সকাল থেকে পুলিশের গাড়ি টহল দিচ্ছে। কাঁচা চামড়া সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

রাজধানীর দূষণ বন্ধে হাজারীবাগের ট্যানারিগুলো সরানোর জন্য ২০০১ সালে নির্দেশনা দেয় উচ্চ আদালত। নির্দেশনা অনুযায়ী সরকার সাভারে চামড়া শিল্পনগরী করে সেখানে ট্যানারিগুলো সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়।

এরপর এক যুগের বেশি সময় লেগে যায় চামড়া শিল্পনগরী প্রকল্পের কাজ শেষ করতে। ২০১৫ সালের জুনের মধ্যে সেখানে কারখানা সরিয়ে নেয়ার সময়সীমা থাকলেও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় দফায় দফায় তা পেছায়। অবশেষে চলতি বছর জানুয়ারিতে আংশিকভাবে চালু হয় সিটিপি।

এ সময়ে বহুবার ট্যানারি মালিকদের তাগাদা দেয়া হয় তাদের কারখানা চামড়া শিল্প নগরীতে সরিয়ে নেয়ার। কিন্তু তাতে কান দেয়নি ১৫৫টি ট্যানারির কেউই।

গত জানুয়ারিতে ২৮টি ট্যানারির মালিককে উকিল নোটিস পাঠায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।

১০ জানুয়ারি শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ঘোষণা দেন, যেসব ট্যানারি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হাজারীবাগ ছাড়বে না, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।

পরে ট্যানারি মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।



মন্তব্য চালু নেই