চাবি ছাড়াই খুলে ফেলা যাচ্ছে যে কোনও তালা, এমনকী কম্পিউটারও

তালা-চবির রোম্যান্টিক জুটিকে প্রায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসল প্রযুক্তি। খুলে ফেলা যেতে পারে যে কোনও তালা। এমনকী, পাসওয়র্ড ছাড়াই খুলে ফেলা যাবে যে কোনও কম্পিউটারও।

‘আমার বাঁশির সুরের সুতোয়/ দেহের ফুলে মালা/ ট্রা রালা লি রালা লা/ ঠিক চাবি হাতে দেখি খুলে যায় তালা’
তুষার রায়ের ‘ব্যান্ডমাস্টার’ কবিতাটির শেষ কয়েকটি পঙক্তি ছিল এই রকমেরই। কিন্তু ব্যান্ডমাস্টারের তালা খোলার ম্যাজিক চাবিহীন ছিল, এমন দাবি তুষার করেননি। এমন দাবি করেননি কখনওই হ্যারি হুডিনির মতো ‘এসকেপোলজিস্ট’, যিনি বিনা চাবিতে পৃথিবীর দুরূহতম তালা খোলার ক্ষমতা রাখতেন বলে শোনা যায়। কিন্তু তিনিও চাবির কোনও বিকল্প ব্যবহার করতেন বলেই জানা যায়। জেমস বন্ডও যে কোনও তালা খোলার ‘মাস্টার কি’ পকেটে রাখেন বলে জানায় বন্ড-ছবির কাহিনি। কম্বিনেশন লকেরও সংখ্যাগুলিই ‘চাবি’। সুতরাং, আজ পর্যন্ত চাবি ছাড়া তালা খোলার কথা তেমন জানা যায়নি।

তালা-চবির রোম্যান্টিক জুটিকে প্রায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসল প্রযুক্তি। হাতের ত্বকের নীচে খুদে মাইক্রোচিপ বসিয়ে খুলে ফেলা যেতে পারে যে কোনও তালা। এমনকী, পাসওয়র্ড ছাড়াই খুলে ফেলা যাবে যে কোনও কম্পিউটারও। নিজের হাতে এমন চিপ বসিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সিডনির শ্যান্টি করপোরাল নামের জনৈক মহিলা।

শ্যান্টির লক্ষ্য ফিউচারিস্টিক জীবনযাপন। ওয়ালেট আর ক্রেডিট কার্ড থেকেও মুক্তি পেতে চান শ্যান্টি। এই মাইক্রোচিপ-কাণ্ড সেই কল্পবিজ্ঞান ধাঁচের লাইফস্টাইলেরই প্রথম পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর পরিকল্পনা সফল হলে জীবন থেকে পাসওয়র্ড বা পিন মনে রাখার ঝকমারি থেকে ছুটকারা মিলবে বলে জানিয়েছেন শ্যান্টি।

এই প্রযুক্তিতে চিপের ভিতরে এমন এক অনন্য আইডেন্টিটি কোড প্রোগ্রাম করা রয়েছে, যা দিয়ে যে কোনও বন্ধ দরজা, কম্পিউটার ইত্যাদি খুলে ফেলা সম্ভব। চিপটির আকৃতি চালের দানার চাইতে বেশি নয়। তাঁর এই আজব চিপ-কে বাজারে ছাড়তেও আগ্রহী শ্যান্টি। তাঁর মনে হচ্ছে, এই প্রযুক্তি কিনতে চাইবেন অনেকেই। ‘টার্মিনেটর’ আর ‘ম্যাট্রিক্স’-এর যুগে আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্সকে পকেটসই করে ফেলতে কে না চান— দাবি শ্যান্টির।
কিন্তু এই চিপ হাতে হাতে ঘুরতে শুরু করলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা লাটে উঠবে কি না, সে বিষয়ে শ্যান্টি নীরব।



মন্তব্য চালু নেই