পাবনার কিছু খবর

চাটমোহরে নিয়ন্ত্রনহীন ভাবে চলছে স্পর্শকাতর পেট্রোল ব্যবসা ॥ লাইসেন্স নেই ব্যবসায়ীদের

পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিলের অধ্যুষিত ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বড়াইগ্রামসহ আশে-পাশের উপজেলাগুলোর হাট-বাজার গুলোতে নিয়ন্ত্রনহীন ভাবে চলছে পেট্রোল ব্যবসা। অবাধে বিক্রি হচ্ছে স্পর্শকাতর এ দাহ্য পদার্থ।

চাটমোহর উপজেলার পৌর এলাকাসহ অন্তত ৫০টি স্পটে ও আশে-পাশের মহাসড়কসহ রাস্তার পাশে প্রকাশ্যে বিভিন্ন বোতলে ভরে পেট্রোল বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। গ্রাম-গঞ্জের হাট বাজারের তো কথাই নেই। চায়ের দোকানের পাশেও পেট্রোল বিক্রি করতে দেখা গেছে অহরহ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাটমোহর উপজেলা সদরের লাইসেন্স নিয়ে পেট্রোল ব্যবসা করছেন কয়েকজন। এর বাইরে আর কোন ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স নেই। বিভিন্ন স্পটে খোলা বাজারে পেট্রোল-অকটেনসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেল বিক্রি করা হচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে মুদি দোকানেও।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ওয়াজেদ আলী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ব তেল কেম্পানীগুলো কোন নিয়ম না মেনেই খুচরা ব্যবসায়ীদের জ্বালানী তেল সরবরাহ করছে। যা আইন পরিপন্থীও। খোলাবাজারের এসব বিক্রেতা পেট্রোল পাম্প, রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানী পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ডিপোর ডিলারদের কাছ থেকেই চাহিদানুযায়ি জ্বলাানী কিনে খুচরা বিক্রি করছে।

সূত্রে মতে, রাষ্ট্রায়ত্ব ওই সকল কোম্পানীও ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী নিয়ম নীতি না মেনে জ্বালানী সরবরাহ করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সচেতন মহলের প্রশ্ন জ্বালানী তেল বিক্রিতে এতটুকু দ্বায়বদ্ধতা নেই ওই সকল রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানী গুলোর ? অবাধে পেট্রোল বিক্রির ফলে সম্প্রতি অবরোধ সমর্থনকারীরা পেট্রোল ঢেলে নাশকতা সৃষ্টি চেষ্টা করে।

চাটমোহর পৌর এলাকায় পেট্রোল সাদৃশ্য বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। পৌর এলাকায় একটি দাঁড়ানো ট্রাকে প্রেট্রোল দিয়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে দৃবৃত্তরা। প্রশাসনের কোনো ধরনের মনিটরিং ছাড়াই খোলাবাজারে এ ধরনের দাহ্য তেল বিক্রি হওয়ায় যে কেউ যে কোন স্থান থেকে জ্বালানী সরবরাহ করে ইচ্ছে অনুযায়ী ব্যবহার করে আসছে।

ফলে অগ্নিকান্ডে বিপুল ক্ষয়ক্ষতিসহ বর্তমান হরতাল-অবরোধে নাশকতার বড় ধরেনের আশংকা করছে সচেতন মহল। এব্যাপারে চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ সুব্রত কুমার সরকার জানান, থানায় পেট্রোল ব্যবসায়ীদের কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। পেট্রোল ব্যবসা নিয়ন্ত্রনে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় প্রশাসন পেট্রোল পাম্প মালিক ও খুচরা পেট্রোল বিক্রেতাদের সাথে মত বিনিময় করা হয়েছে। সভায় পেট্রোল বিক্রির ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন ও অপরিচিত ব্যক্তিদের কাছে পেট্রোল বিক্রির ক্ষেত্রেরেজিষ্ট্রারে নাম লিপিবদ্ধ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চাটমোহরে বিলকুড়ালিয়ার ভূমিহীনরা বোরো রোপণে ব্যস্ত ॥ মুখে হাসির ঝিলিক
পাবনার চাটমোহরে বিলকুড়ালিয়া ভূমিহীনরা বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা হরতাল অবরোধ উপেক্ষা করে বোরো রোপণে করছেন। শান্তিপূর্ণভাবে বোরো রোপণ করায় ভূমিহীনদের চোখে মুখে বইছে হাসির ঝিলিক।

জানা গেছে, বিলকুড়ালিয়া মৌজার আরএস রেকর্ডভূক্ত ফসলী শ্রেণীর ৩৭১.২১ একর খাস জমিতে সংগঠিত এক হাজার পাঁচশত নব্বইটি ভূমিহীন পরিবাব বোরো চাষাবাদ করছেন।

জানা গেছে, ৪১টি শ্যালো, ২টি ডিপ ও ১টি মিনি ডিপ টিউবয়েলের পানিতে বিলপাড়ের ১৫টি গ্রামের ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা ইরি ২৮,২৯ ও ৭৬ জাতের বোরো ধানের চারা রোপণ করেছেন। নিজ নিজ বরাদ্ধ পাওয়া খাস জমিতে ১৯৯৩ সন হতে তারা ভূমিগ্রাসী-জোতদার-কবুলিয়াতিদের বহু হামলা-মামলা মোকাবিলা করে খাস জমি দখলে রেখে চাষাবাদ করে আসছে।

গত ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের অনুমোদিত ৪০৯টি ভূমিহীন পরিবারের নামে স্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য কবুলিয়াত সম্পাদন এবং রেজিস্টেশন সম্পন্ন হয়েছে। আরো ৪৫৪টি পরিবারের বন্দোবস্ত পাবনা জেলা বন্দোবস্ত কমিটি কর্তৃক সভায় অনুমোদিত হয়ে জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর ও চুড়ান্ত অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

২২ বছরের লড়াইয়ের ফসল এক টুকরো খাস জমি বন্দোবস্ত সুত্রে মালিক হওয়ার স্বপ্ন পুরণে বিলপাড়ের ভূমিহীন পরিবারের মুখে হাসি উজ্জলতার ছাপ।

এলডিও’র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর নুরে আলম সিদ্দিকী মন্জু জানান, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন ও এএলআরডি’র কৃষি কার্যক্রম ও আইনী সহায়তায় ভূমিহীনদের অর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। মিথ্যা মামলার আসামী হওয়া সদ্য বন্দোবস্ত প্রাপ্ত মহিলা নেত্রী সামিরন জানালেন অল্পদিনে মধ্যে ৩০ শতক জমি হতে আমি সারা বছরের খাওয়ার ধান ঘরে উঠাতে পারবো। ৬ থেকে ১২ মাসের খাবার উঠবে ভূমিহীন পরিবারের।

বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ভূমিহীন নেতা হাসান আলী জানান, আবহাওয়া ভালো থাকলে ভূমিহীনেরা বিলকুড়ালিয়া মৌজার খাস জমি থেকে ২৫ হাজার মন ইরি বোরো ধান ও ৬ হাজার মন আমন ধান ঘরে তুলতে পারবে খাস জমির আবাদ থেকে।

ভূমিহীন নেতা আনোয়ার হোসেন জানান, ২২ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম মাননীয় এমপি মকবুল ভাই জমি বন্দোবস্ত প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। ৫৫ বছরের বিলকুড়ালিয়ার সমস্যার সমাধান হয়েছে, উপকৃত হয়েছে বিলপাড়ের ভূমিহীন মানুষ।

ভূমিহীনদের সংগঠক এলডিও’র নির্বাহী পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান রানা মাষ্টার জানান. দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করে বিলকুড়ালিয়ার ভূমিহীনদের খাস জমির বন্দোবস্ত পাওয়ার ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মত ক্ষুদ্র একটি মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়া।



মন্তব্য চালু নেই