চাঁদের প্রথম নভোচারী আর্মস্ট্রংয়ের লুকানো ব্যাগ মিলেছে

চাঁদের মাটিতে প্রথম পা পড়েছিল যার, সেই নিল আর্মস্ট্রংয়ের মৃত্যুর পর থেকে তার ঘরটি সামলাচ্ছিলেন নিল-পত্নী ক্যারল আর্মস্ট্রং। সম্প্রতি নীল আর্মস্ট্রংয়ের ব্যবহৃত একটি ওয়ার্ডড্রব পরিস্কার করার পর সেখানে লুকানো একটি ব্যাগ দেখতে পান তিনি। কৌতূহলে ব্যাগ খুলেই চমকে ওঠেন ক্যারল আর্মস্ট্রং। ‘ম্যাকডিভিট পার্স’ নামে পরিচিত এই কিটব্যাগটি ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে ঐতিহাসিক অ্যাপোলো-১১ অভিযানের সময় নিলের সঙ্গী হিসেবে চাঁদে গিয়েছিল।

এই ব্যাগের মধ্যে থেকে ক্যারল আর্মস্ট্রংয়ের চোখে পড়ে ১৮টি সামগ্রী। এর মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক ক্যবল, কোমর থেকে কোনো জিনিস ঝুলিয়ে রাখার কাজে ব্যবহৃত বিশেষ বেল্ট প্রভৃতি। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্যাজেট হচ্ছে, একটি ১৬ মিলিমিটার ফিল্ম ব্যবহারযোগ্য ক্যামেরা। ঐতিহাসিক এই ক্যামেরাতেই চাঁদের মাটিতে অবতরণের ছবি তোলা হয়। তোলা হয় চাঁদের পিঠে মার্কিন পতাকা উত্তোলনের ছবি। এ ছাড়াও ব্যাগে ছিল ১০ মিলিমিটার মাপের একটি লেন্স এবং একটি লেন্সগার্ড।

‘ম্যাকডিভিট পার্স’ নামে পরিচিত এই ব্যাগের নামকরণ হয় অ্যাপোলো-৯ এর কম্যান্ডার জিম ম্যাকডিভিটের নামানুসারে। তিনিই প্রথম প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহাকাশচারীদের সঙ্গে এমন একটি ব্যাগ রাখার, যে ব্যাগটি অভিযান শেষে চাঁদের ওপরেই রেখে আসা যেতে পারে। অ্যাপোলো-১১ অভিযানের সময় এই ব্যাগ হাতে নিয়ে এডউইন অলড্রিনের ছবিও আছে। নিল আর্মস্ট্রংয়ের দ্বিতীয় মানুষ হিসেবে চাঁদের পৃষ্ঠে পা রাখেন অলড্রিনই।

চন্দ্র অভিযানের শুরুতে ঠিক হয়েছিল, এই ব্যাগ নিল চাঁদেই রেখে আসবেন। মহাকাশযানের ওজন কমানোর জন্যই এমন ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেন নির্দেশ অমান্য করেছিলেন নিল, তা জানা যায়নি। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি কখনো এই ব্যাগের অস্তিত্বের কথা কারও কাছে প্রকাশও করেননি। তবে, এই ব্যাগের কথা জানতে পারার পরই ক্যারোল স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল এয়ার অ্যান্ড স্পেস মিউজিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

জাদুঘরের অধ্যক্ষ অ্যালান নিডেল জানিয়েছেন, ওই ব্যাগে যা রয়েছে তা দেখে যে কোনো জাদুঘরের কর্তৃপক্ষের চোখ কপালে উঠে যাবে। ব্যাগের মধ্যে থাকা ছোট ছোট যন্ত্রাংশগুলো নতুন করে মনে পড়িয়ে দেয় সাড়ে চার দশক আগে কী নিখুঁত হিসেব ও গবেষণাই না চালিয়েছিলেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। নিডেল জানিয়েছেন, নিল আর্মস্ট্রংয়ের সঙ্গী ম্যাকডিভিট পার্স এবং তার মধ্যেকার সামগ্রীগুলো জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া



মন্তব্য চালু নেই