চট্টগ্রামের রাউজানে পাহাড়ী ঢলে সর্তার ভাঙ্গন তীব্র

ঈদ পরবর্তী প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ীঢলে রাউজানের রস্তাঘাট সহ বিভিন্ন স্থাপনার ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পাহাড়ী ঢলে সর্তাখালে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে ।

জানা গেছে, রাউজানের ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকায় বিভিন্ন খালের পাহাড়ী ঢলে প্লাবিত হয়। রাউজানের বিভিন্ন এলাকা দুই একদিন পানির নিচে তলিয়ে থাকে। প্রবল বর্ষণ ও সর্তা,ডাবুয়া,খাসকালী খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ২৬ ও ২৭ তারিখ রাউজান সদর সহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে ডুবে থাকে। তীব্র বর্ষণে রাউজানে রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে উত্তর রাউজানের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম মওলানা দোস্ত মোহাম্মদ সড়ক চলাচলের অযোগী হয়ে পড়েছে। আমিরহাট বাজার থেকে রাউজান রেজিস্ট্রারী অফিসের মাথা পর্যন্ত শুধু গর্ত আর গর্ত। একেকটি গর্ত মিনি পুকুড় সমান। প্রতিনিয়ত গর্তে পড়ে অনেক গাড়ীর যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে।

শুধু তা নয় ঐ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী সাধারন অনেক ঝুকিপূর্ণভাবে আসা যাওয়া করছে। বৃষ্টির আগে তেমন চলাচল করতে কষ্ট না হলেও ঈদ পরবর্তী বিরামহীন বৃষ্টিতে ঐ সড়কটি চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কটির নিরিয়ারটেকে পাহাড়ীঢলের পানি একপাশ থেকে আরেক পাশে বয়েছে।

এদিকে রাউজানের বিভিন্ন এলাকার ছোট বড় রাস্তার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। অনেক পুকুড় ডুবে হাজার হাজার টাকার মাছ ভেসে গেছে। অনেক মৎসজীবি লোন নিয়ে মৎস চাষ করা বিভিন্ন প্রজেক্ট পানিতে ডুবে তাদের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। হালদা নদীর বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ডাবুয়ার সর্তা খালের বারই পাড়া এলাকা,হলদিয়ার বইজ্জার হাট,আলী হোসেন শাহ ব্রীজের পশ্বিম পাশ্বে,সর্তা খালের পানি কমার সাথে সাথে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

pic-28এদিকে বইজ্জার হাট এলাকার দুই তিনটি ঘর সর্তার প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে গেছে বলে জানান হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে উত্তর হলদিয়ায় এগার হাজার লাইনের একটি বিদ্যুতের খুটি সর্তা খালে তলিয়ে গেছে। ঐ খুটির কয়েকটি কেবল পানিতে ছিড়ে পড়েছে। ঐ এলাকার সমাজ সেবক খিরাম মাদ্রাসার শিক্ষক মওলানা দিদারুল আলম জানান গত ২৬শে জুলাই খুটি পানিতে পড়ে গেলেও পল্লী বিদ্যুত কে জানানো হলেও এই রিপোট লেখা পর্যন্ত ২৮ শে জুলাই পর্যন্ত ঐ খুটিটি ঠিক করা হয়নি। উত্তর হলদিয়ার ৩০০ পরিবার এক সাপ্তাহ যাবত বিদ্যুত বিহীন হয়ে পড়েছে ।

অনেকের ফ্রিজের বিভিন্ন জরুরী মাছ মাংস নষ্ট হয়ে গেছে । অনেকেই মোবাইল চার্যে দিতে পারছেনা। এদিকে রাউজানের পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট ক্ষতি সাধিত হয়েছে জানান রাউজান পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশির উদ্দিন খান। পুকুড়ের মাছ ভেসে গিয়েছে । টানা বর্ষণে দক্ষিন রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মোকামী পাড়ায় স্থানীয় সাংবাদিক এস এম ইউছুফের বাড়ীর ফিছনে হালদার ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পশ্চিম গুজরার হালদা নদী তীব্র ভাঙ্গনে হুমকির মুখে শত শত পরিবার।

pic-28-7রাউজানের সংসদ এবি এম ফজলে করিমের নির্দেশে হালদার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পশ্বিম গুজরা ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আরিফ। এদিকে বৃষ্টি বাড়লেই চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি সড়কের দায়রা ঘাটা,বেরুলিয়া,জলিল নগর,মুর ঘাটা ও ফায়ার ব্রিগ্রেটের সামনে হাটু পরিমান কোন কোন জায়গায় কোমার সমান পানিতে তলিয়ে যায়। এতে যাত্রী সাধারনের দুর্ভোগ মারাতœক আকার ধারন করে। রাঙ্গামাটি সড়কের উপর অনেককে জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়। কয়েকদিনের বর্ষনে রাউজান থানা রোডের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অনেক চালের গুদামে পানি ডুকে গিয়ে হাজার হাজার টাকার চাওল নষ্ট হয়েগেছে। ব্যাপক বৃষ্টিতে রোপনকৃত আমনে অনেক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। আবার অনেকের বীজতলা ও নষ্ট হয়েগেছে। বেশ কয়েকদিন পানি জমে থাকায় বিশেষ করে বটবটি ,ঢেড়স ,বেগুন ,করলা ও অন্যান্য শাকসবজি শাষের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বৃষ্টির কারনে বাজারে শাকসবজির দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে।

এদিকে রাউজানের হাফেজ বজলুর রহমান সড়ক ও গহিরা অদুদিয়া সড়ক দিয়ে মানুষ নৌকা দিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। অতিবৃষ্টির কারনে মানুষের দৈনন্দিন কাজ কর্মের স্থবরিতা নেমে আসে। এদিকে যত্রতত্র বিল্ডিং নির্মান করার কারনে বৃষ্টি পড়লে আগের মত পানি নিস্কাসন না হওয়ায় মুহুর্তে মধ্যে পানি জমে গিয়ে রাস্তায় উঠে পড়ে । অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন রাউজানের সর্তাখাল, ডাবুয়া খাল, খাসখালী খালের পানি দ্রুত গতিতে হালদায় পড়তে পারলে রাউজান এলাকায় আর তেমন প্রভাব পড়তো না। কিন্তু ডাবুয়া খালের যে পরিধি সে মত ডাবুয়া খাল পানিগুলো হজম করতে পারছেনা বিদায় পাশের বাধ ভেঙ্গে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাউজান সদর সহ রাঙ্গামাটি সড়ক ও বিভিন্ন এলাকাকে প্লাবিত করে পেলে। এই থেকে পরিত্রানের একমাত্র পথ ডাবুয়া খালকে ড্রেজিংয়ের আওতায় আনা।

সব মিলিয়ে রাউজানের ব্যপক ক্ষতি সাধিত রাস্তাঘাট অনতিবিলম্বে সংস্কার করে দুর্ভোগ লাগবে এগিয়ে আসবেন কতৃপক্ষ সে আশা সকলের।



মন্তব্য চালু নেই