ঘাটাইলে লোকসানের মুখে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা

মাঠ থেকে বেশি দামে কোরবানির পশুর চামড়া কিনে লোকসানে পড়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকায় মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। রোববার বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকার প্রধান চামড়া হাট টাঙ্গাইলের পাকুটিয়া বাজার ঘুরে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য। তারা জানান, কোরবানি পশুর চামড়া চড়া দামে কিনে কম দামে বিক্রি করে লোকসানের মুখে পড়েছে অধিকাংশ মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী।
টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়ায় বৃহত্তম পুরাতন চামড়ার হাটে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ ট্রাক চামড়া কম উঠেছে বলে জানান হাট ইজারার সাথে জড়িত হারুন অর রশিদ। হাট কর্তৃপক্ষ ধারণা করছেন, ওই চামড়া অন্যত্র পাচার হয়েছে। তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহের রোববার পাকুটিয়ায় চামড়ার হাট বসে । প্রতি হাটে ২৫/৩০ লাখ টাকার চামড়া বেচাকেনা হয়। কোরবানির ঈদ মৌসুমে এই হাটে দেড় থেকে দুইশ’ কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনা হয়। এ হাটে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুরসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকার চামড়া ব্যবসায়ীরা এ হাটে চামড়া বেচাকেনা করেন। তিনি জানান, মাঠ থেকে বেশি দামে চামড়া কেনায় মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা এবার লোকসানের মুখে পড়েছেন।  কোরবানি ঈদে গরম বেশি হওয়ায় মাঠ থেকে কেনা কাঁচা চামড়া মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে না পাড়ায় চামড়ায় লবণ লাগিয়ে মজুত করে রেখেছে। এতে চামড়াপ্রতি আরো ১২৫ টাকা খরচ বেশি পড়েছে, যা তাদের লোকসানের সাথে যুক্ত হয়েছে।
পাকুটিয়া ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিহাবুল ইসলাম নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা কোরবানির মাঠ থেকে গরুর চামড়া ৮০ থেকে ১২০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ৪০ টাকা ফুট কিনে সংগ্রহ করছেন। এখন ঢাকার আড়তদারা তাদের বেঁধে দেয়া ৬৫ থেকে ৮০ টাকা দর এর উপরে চামড়া না কেনায় মৌসুমি ও ক্ষদ্র চামড়া ব্যবসায়ীরা  বিপাকে পড়েছেন। তারা লোকসান দিয়ে না পারছেন চামড়া বিক্রি করতে, না পারছেন চামড়া সংরক্ষণ করতে।
ঢাকার ট্যানারি মালিকদের নিকট থেকে যারা দাদন নিয়ে বেশি দামে চামড়া ক্রয় করেছেন তারা এখন মহাবিপদে পড়েছেন। কারণ ট্যানারি মালিকরা ক্রয়কৃত দামেও তাদের কাছ থেকে  চামড়া কিনছেন না। ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী আ. বাছেদ জানান, এবার তিনি ১২০টি গরুর চামড়া ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় কিনে এ পর্যন্ত ৮৬ পিস বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। বাকি চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না।
কুয়াশা লামিয়া এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মো. কামাল খান বলেন, ট্যানারিদের কাছ থেকে যারা দাদন নিয়ে না বুঝে মাঠ থেকে বেশি দামে চামড়া কিনেছেন তারা এবার বেশি  ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বৃহত্তর ময়মনসিয়হের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, হাটের ব্যবস্থাপনা খুবই খারাপ, হাটে চামড়া রাখার ভালো কোনো গুদামঘর নেই নেই, ভালো খাবার হোটেল নেই, ব্যবসায়ীদের থাকার কোনো সুব্যবস্থা। নেই পানি  পয়োনিষ্কাশন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কোনো ব্যবস্থা।
তারা অভিযোগ করেন, কোরবানি ঈদ মৌসুম এলে এখানকার ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন এক লাফে ট্রাক ভাড়া দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে দেন। তারা দেশের প্রাচীন এই হাটটির প্রতি স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারকে বিশেষ নজর দেয়ার আহ্বান জানান।



মন্তব্য চালু নেই