ঘরের যে সাধারণ জিনিসগুলো আপনার ফুসফুসের ক্ষতি করে চলেছে

কারও কারও স্বাস্থ্যগত কারণে ফুসফুস থাকে অন্যদের চাইতে কিছুটা দুর্বল। কিন্তু আমাদের ঘরোয়া কিছু অনুষঙ্গের কারণেই একজন সুস্থ মানুষের ফুসফুসেও দেখা দিতে পারে সমস্যা। টুকটাক অ্যালার্জি, হাঁচি-কাশি থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো সমস্যা তৈরি করে ফেলতে পারে আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ এসব জিনিস। চলুন দেখে নিই ঘরের কী কী জিনিস এমন বিপজ্জনক হতে পারে।

১) ব্লিচ
মেঝে অথবা টাইলসের জেদি দাগ দূর করা বা পুরনো দাগ সরানোর জন্য লিকুইড ব্লিচ, ব্লিচিং পাউডার, ক্লোরিন, অ্যামোনিয়া এসব অনেকের বাড়িতেই থাকে। যাদের অ্যাজমা অথবা ফুসফুসের কোনো ক্রনিক রোগ আছে তাদের পরিস্থিতি খারাপ করতে পারে এসব উপাদান। এমনকি যাদের আগে অ্যাজমা ছিলো না তাদের এই রোগ তৈরি করতে পারে এগুলো। সাধারণ ঘরবাড়িতে আসলে এমন রাসায়নিকের দরকার হয় না। গরম পানি এবং সাবান ব্যবহার করেই এসব পরিষ্কারকের কাজ আপনি সেরে নিতে পারেন।

২) কার্পেট
অবাক হচ্ছেন? মেঝে পরিষ্কার রাখার জন্য যে কার্পেট আমরা ব্যবহার করি তা আসলে সাধারণ ফ্লোরের চাইতে অনেক বেশি ধুলো আটকে রাখে। এতে অ্যাজমা এবং সাধারণ কাশির সম্ভাবনা বাড়ে। বিশেষ করে বাড়িতে যদি বাচ্চারা থাকে, তাহলে তাদের ফুসফুসের জন্য কার্পেট খারাপ হতে পারে।

৩) ভ্যাকুয়াম ক্লিনার
অনেকে ভাবতে পারেন কার্পেট ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করে নিলেই তো হলো। কিন্তু ভ্যাকুয়াম করতে গিয়ে উল্টো কার্পেটে আটকে থাকা ধুলো বাতাসে চলে আসতে পারে, এতে নিঃশ্বাসে সমস্যা হতে পারে বেশি। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ও কার্পেট ব্যবহারের বদলে ফ্লোর খালি রাখুন এবং নিয়মিত মুছে নিন।

৪) বাথরুমের সিঙ্ক
বাথরুমে জন্মানো ছত্রাক ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর। যাদের অ্যাজমা আছে তাদেরকে অসুস্থ করতে পারেন, এর পাশাপাশি সুস্থ মানুষের ফুসফুসে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বাথরুম সিঙ্কের নিচে, বাথরুমের জানালায় এবং পাপোষে পানি জমে ছত্রাক জন্মাতে পারে এবং ক্ষতি করতে পারে। আপনার বাথরুমে কোনো জায়গা যদি এমন সারাক্ষণ ভিজে থাকে তাহলে সেই জায়গা থেকে পানি সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করুন এবং বাথরুম যেন সবসময় ভেজা না থাকে সেই উদ্যগ নিন।

৫) কীটনাশক
তেলাপোকা, মশা অথবা ছারপোকা দমনের জন্য আমরা যেসব স্প্রে ব্যবহার করু সেগুলোর ক্যানের গায়ে লেখা নির্দেশনা পড়ে তা অনুসরণ করা উচিৎ, নতুবা ফুসফুসে সমস্যা হতে পারে। যেমন অনেক স্প্রে এর নির্দেশনায় বলা থাকে স্প্রে করে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে হবে ১০-১৫ মিনিটের জন্য, কিন্তু আমরা তা করি না বরং ঘরেই বসে থাকি এবং নিঃশ্বাসের সাথে শরীরের ভেতরে নিই। এতে ভবিষ্যতে গুরুতর সমস্যা হতে পারে।

৬) রং
ঘরের দেওয়াল অথবা ফার্নিচার রং করার সময়ে খেয়াল রাখুন যেন যথেষ্ট বাতাস চলাচল করার উপায় থাকে। পেইন্ট থেকে সাধারণত VOC নামের ক্ষতিকর রাসায়নিক পরিবেশে ছড়ায়। এদের মাঝে সাধারণ অ্যালার্জি তৈরিকারক উপাদান থেকে শুরু করে কারসিনোজেনিক (ক্যান্সার তৈরিকারক) উপাদান থাকতে পারে। এ কারণে ফার্নিচার ঘরের বাইরে খোলা জায়গায় নিয়ে গিয়ে রং করুন। ঘর রং করার সময়ে জানালা খুলে রাখুন এবং রং না শুকানো পর্যন্ত বাতাস চলাচল করতে দিন অবাধে।



মন্তব্য চালু নেই