“গ্যাংনাম স্টাইল” ট্রফির মতো, যত দেখি সুখী লাগে

গ্যাংনাম স্টাইল। ২০১২ সালে ইউটিউবে ছাড়া মিউজিক ভিডিও গ্যাংনাম স্টাইলের বদৌলতে সারা বিশ্বে রাতারাতি তারকা বনে যান দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পী পার্ক জে সেং, যাকে এখন সারা বিশ্ব চেনে সাই নামে। তার ওই মিউজিক ভিডিও এ পর্যন্ত ইউটিউবে দেখা হয়েছে রেকর্ড ২৫০ কোটি বার।

এরপরও গান করেছেন সাই। কিন্তু সেটা ছাড়িয়ে যেতে পেরেছেন কি? সাই বলছেন, গ্যাংনাম স্টাইল তার কাছে একটা ট্রফির মতো। সেটাকে যতবার দেখেন, নিজেকে সুখী মনে হয়।

কোরিয়ান ভাষার একটা গান কীভাবে বিশ্বের মানুষকে পাগল করে তুলল, সেটা শিল্পীর নিজের কাছেও এক অপার রহস্য। বিবিসিকে সাই বলেন, ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ গানটা আসলেই অদ্ভুত।

শনিবার বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত সাইয়ের এক সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
তার উদ্দাম নাচের সঙ্গে তাল মেলানো মুশকিল। মোটাসোটা গড়ন। চোখে সব সময় কালো সানগ্লাস। দেখতে আকর্ষণীয়। কিন্তু একজন পপস্টার বলতে যে রকম বোঝায়, তার চেয়ে কিছুটা আলাদা সাই। সামনাসামনি সাক্ষাতে একেবারেই একজন সাধারণ মানুষ; দুই সন্তানের বাবা গড়পড়তা এক সাধারণ মানুষ।

স্বল্পপরিচিত এক কোরিয়ান শিল্পী থেকে সাই রাতারাতি বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়ে যান গ্যাংনাম স্টাইল দিয়ে। এই তুমুল জনপ্রিয়তা সাই কীভাবে সামাল দিয়েছেন?

”এটা আমার ব্যক্তিগত একটা বিষয়। আমি আসলে একজন সাধারণ মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চাই। আমি বাঁচতে চাই একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে, একজন বাবা হিসেবে, একজন স্বামী হিসেবে।”

সাই বলেন, ”আসলে শিল্পী কিংবা গায়করা তো সে রকম আলাদা বা বিশেষ কিছু না। তারা যা করেন, সেটাও আসলে আর দশটা কাজের মতো একটা কাজ। আমি যখন গান গেয়ে মঞ্চ থেকে নেমে আসি, তখন আমি আসলে একজন স্বাভাবিক মানুষের মতোই চলার চেষ্টা করি।”

গ্যাংনাম স্টাইলের তুমুল সাফল্যের পর এই জনপ্রিয়তাকে বর্ণনা করেছিলেন একই সঙ্গে স্বপ্ন এবং দুঃস্বপ্ন হিসেবে। সেটার কারণ কী?

সাই বরেণ, ”বিশ্বজুড়ে এই গানের পর এই যে খ্যাতি, এটা ছিল স্বপ্ন। বিশ্বের এত দেশে এই যে খ্যাতি এবং স্বীকৃতি, বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ, সেটা ছিল স্বপ্ন। কিন্তু তারপরই আমার মনে হলো, যখন এটা শেষ হয়ে যাবে তখন কী? আমি কি আর নতুন গান করতে পারব? সেটাই ছিল আমার দুঃস্বপ্ন।”
সাই অবশ্য এই দুঃস্বপ্ন পেছনে ফেলে নতুন গান বেঁধেছেন, এবং সেই গানও সফল হয়েছে। এটি আসলে জনপ্রিয় রক গায়ক উইল-আই-এম-এর গানের প্যারোডি।

”উইল-আই-এম-এর একটি গান ছিল- আই গট ইট ফ্রম মাই মামা। এই গানে এক সুন্দরীকে উইল-আই-এম জিজ্ঞেস করছেন, তোমার এত সুন্দর দেহ তুমি কোথায় পেয়েছে? মেয়েটি উত্তর দিচ্ছে, আই গট ইট ফ্রম মাই মামা”

সাই বলেন, ”আমি ভাবলাম, মেয়েরা যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার এই সুন্দর দেহ তুমি কোথায় পেয়েছ?- আর আমি যদি বলি, আই গট ইট ফ্রম মাই ড্যাডি। সেখান থেকেই এই নতুন মিউজিক ভিডিওর আইডিয়াটা মাথায় আসে।”

কিন্তু গ্যাংনাম স্টাইলকে কি ছাড়িয়ে যেতে পারবে এই নতুন ভিডিও? সাই বলছেন, গ্যাংনাম স্টাইল তার কাছে একটা ট্রফির মতো। ”সেটাকে কীভাবে আসলে ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব? একটা ট্রফি জেতার পর সেটা যেমন আপনি ঘরে সাজিয়ে রাখেন, আমার জীবনে গ্যাংনাম স্টাইল আসলে তাই। যতবার আমি এই ট্রফি দেখি, নিজেকে সুখী মনে হয়।”



মন্তব্য চালু নেই