গৌরবের পতাকা হাতে মিষ্টি কাঠবিড়ালি

হাজার বছরের বাঙালি নানা ইতিহাসে সমৃদ্ধ হলেও স্বাধীনতা লাভের ইতিহাস সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল। সেই স্বাধীনতা প্রাপ্তির দিনক্ষণ ১৬ ডিসেম্বর যতই এগিয়ে আসে ততই যেন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙালি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। আর সেই আবেগ থেকে বাদ গেল না এ বৃক্ষ থেকে সে বৃক্ষে দাপিয়ে বেড়ানো একটি কাঠবিড়ালিও।

রাজধানী ঢাকা ছাড়াও এখন সারা দেশে পতাকা বিক্রির ধুম। এমনকি রাজধানীর রমনা পার্কে বেড়াতে যাওয়া ভ্রমণপিপাসুদের কাছেও বিক্রি করা হচ্ছে সেই পতাকা।

সুদূর কুড়িগ্রাম থেকে আসা আসলাম হোসেন মঙ্গলবার শীতের মিষ্টি সকালে পতাকা বিক্রির এক ফাঁকে বকুলতলায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আর চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে উদাস হয়ে হয়তো ফেলে আসা আপনজনের কথা ভাবছিলেন। কিন্তু সেই ভাবনায় ছন্দপতন ঘটে চঞ্চল কাঠবিড়ালি খপ করে তার একটি পতাকা নিয়ে দৌড় দিলে। বকুল গাছের ঘন পল্লব থেকে হঠাৎ নেমে আসায় পতাকা বিক্রেতা কিছুই বুঝতে পারেননি। কাঠবিড়ালিটি পতাকা নিয়ে একটু দূরেই ঘাসের ওপর দাঁড়িয়ে তা নাড়তে থাকে।

এ দৃশ্য দেখে রমনায় হাঁটতে আসা লোকজন থমকে দাঁড়ায়। অবাক হয়ে সবাই সেই দৃশ্য উপভোগ করে। আর সেই সময় সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন রমনায় নানা দুর্লভ ছবি তুলে সুনাম অর্জন করা দৈনিক সকালের খবরের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ও ডিআরইউর সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আজমল হক হেলাল।

ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক শব্দেও ‘গর্বের ভঙ্গিতে’ দাঁড়িয়ে থাকে কাঠবিড়ালিটি। শুধু চঞ্চল দৃষ্টি দিয়ে এদিক ওদিক তাকায়। কিন্তু এর মধ্যেই অনেকে ঘিরে ধরেছে কাঠ বিড়ালটিকে। তার কাণ্ড দেখে সবাই হাততালি দিয়ে ওঠে। কিছুটা ‘লজ্জা’ পেয়ে লাফ দিয়ে উঠে পড়ে কাঁঠালচাপার গাছে। দাঁতে কামড় দিয়ে সঙ্গে নিয়ে যায় পতাকাটিও।

এ বিষয়ে পতাকা বিক্রেতা আসলাম হোসেন বলেন, একটি পতাকা হারালাম কিন্তু কোনো আফসোস নেই। প্রতি বছরই এই সময় পতাকা নিয়ে ঢাকায় আসি। কিন্তু এমন আনন্দদায়ক ঘটনা দেখিনি কখনো।

রমনায় হাঁটতে আসা আরিফ রহমান (৬১) জানান, সকালবেলা এমন দৃশ্য দেখে মনটা ভালো হয়ে গেল।



মন্তব্য চালু নেই