গৃহবধূদের সম্পর্কে সকলের যে ধারণাগুলো একেবারেই ভুল (ভিডিও)

হ্যাঁ, সমাজে ক্রমশ কর্মজীবী নারীদের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু তারপরও প্রচুর সংখ্যক গৃহবধূরা আছেন এবং চিরকালই থাকবেন। তবে আজকাল একটি ব্যাপার লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, গৃহবধূদেরকে কেন যেন কেউ মূল্য দিতে চায় না। এমনকি নিজের পরিবার পরিজনদের কাছেও প্রায়ই তাঁদের শুনতে হয়- “সারাদিন করো টা কী?” যদিও সত্য এটাই যে একজন গৃহবধূ কোন কর্মজীবী নারীর চাইতে কম কাজ করেন না মোটেও। জেনে নিন গৃহবধূদের সম্পর্কে যে ভুল ধারণাগুলো পোষণ করেন সকলে। হয়তো আপনি নিজেও!

১) তাঁরা সারাদিন আরাম করেন

না, একজন গৃহবধূ সারাদিন আরাম করেন না। বরং দিনশেষে বাড়ি ফিরে যে একটি সাজানো গোছানো ঘর পান আপনি, তৈরি করা খাবার পান, কাপড় গুলো ধোয়া পান; ইত্যাদি সবকিছুই বাড়ির সেই গৃহবধূর করা কাজ। সারাদিন তিনি এসব করতে গিয়েই একটু বিশ্রাম নেবার অবসর পান না।

২) সিরিয়াল দেখাই তাঁদের একমাত্র কাজ

এটিও একটি চরম ভুল ধারণা। একজন গৃহবধূ যদি সারাদিন সিরিয়ালই দেখবেন, তাহলে বলাই বাহুল্য যে তাঁর সংসার লাটে উঠবে। যতই কাজের মানুষ থাকুক না কেন, সংসার এমন একটি জিনিস যা নিজেকেই দেখাশুনা করতে হয়। গৃহবধূ মাত্রই ঘরে বসে সিরিয়াল দেখেন, এই ধারণা একদম বাদ দিন।

৩) তাঁরা অলস

হয়তো কাজ শেষে দুপুরে একটু বিশ্রাম নিলেন, কিন্তু তাই বলেই তাঁরা অলস নন। একবার ভেবে দেখুন, গৃহবধূ হওয়াটা সপ্তাহে ৭ দিন, মাসে ৩০ দিন, বছরে ৩৬৫ দিনের একটি কাজ। না এতে কোন বেতন আছে, না কোন ছুটি, আর না একটু আরাম করার অবসর। অসুস্থ হলেও সংসারকে ফেলে রাখে যায় না। বিনিময়ে একজন গৃহবধূর অর্জন কী? কেবলই নিজের পরিবারের কাছে স্বীকৃতি। সেটুকুও যদি না দেন, তাহলে কি চলবে?

৪) একঘেয়েমী কাটাতে তাঁরা পরকীয়া করেন

এ কথা অনেকেই বলে থাকেন না গৃহবধূরা সারাদিন বাসায় বেকার বসে থাকেন, তাই সময় কাটানোর জন্য পরকীয়া করেন। পরকীয়ার সাথে গৃহবধূ হবার কোন সম্পর্ক নেই। যার পরকীয়া করার ইচ্ছা তিনি এমনিতেও করবেন, ওমনিতেও করবেন।

৫) কাজ করতে না চাইলে নারী গৃহবধূ হয়

কাজ করতে হবে না, উপার্জনের দায় নিতে হবে না কিংবা লেখাপড়ায় খারাপ। গৃহবধূ হবার পেছনে অধিকাংশ মানুষ এগুলোকেই কারণ মনে করে। তাঁরা ভুলে যায় যে অনেক নারী কেবল স্বামী ও শ্বশুরবাড়িকে ভালো রাখার জন্যই গৃহবধূর জীবন বেছে নেন, অনেকে মা হবার জন্য এবং সন্তান পালনের জন্য বেছে নেন ঘরের মাঝের জীবনকেই। এবং এতে মোটেও তাঁদের সম্মান কমে না।

৬) তাঁদের পৃথক কোন জীবন নেই

একজন মানুষ গৃহবধূ বলেই তাঁর পৃথক কোন সত্ত্বা নেই বা তিনি সবকিছু কম বোঝেন, এমনটা ভাবতে যাবেন না মোটেও। গৃহবধূ হওয়া অন্যায় কিছু নয়, কিংবা একজন মানুষের যোগ্যতা কম বলেই তিনি গৃহবধূ হয়েছেন ব্যাপারটি মোটেও তাই নয়। তাঁরও ঠিক আপনার মতই একটা নিজস্ব জীবন আছে, মানুষ হিসাবে একটি পৃথক সত্ত্বা আছে। পরিবার, স্বামী , সন্তানের সাথে গৃহবধূর নারীর সত্ত্বাকে গুলিয়ে ফেলবেন না মোটেই।

সূত্র-
সাইকোলজি টুডে ও ওম্যান’স ডে অবলম্বনে



মন্তব্য চালু নেই