গুলশান হামলা: সরকারের সামনে এখন যে চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত যে দুটো বড় ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে প্রথমটি ছিল পিলখানা হত্যাকাণ্ড আর দ্বিতীয়টি গুলশানে শুক্রবারের জঙ্গি হামলা, যাতে অন্তত ১৭জন বিদেশী নাগরিক নিহত হয়েছে।
এর মধ্যে গত প্রায় দু বছর ধরে ধারাবাহিকভাবেই বিদেশী নাগরিকসহ অনেকেই খুনের শিকার হয়ে আসছেন।
এমন পটভূমিতে গুলশান হামলার পর বাংলাদেশ সরকার কি এখন রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল হবে?
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ বলছেন, প্রত্যক্ষভাবে দুর্বল হবার কোন কারণ নেই।
তবে এ ধরণের হামলার সাথে যেহেতু রাজনীতির একটি সংযোগ থাকে সেহেতু এটাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে, বলছিলেন প্রফেসর রিয়াজ।
তিনি বলেন, সামরিকভাবে কোনও অবস্থাতেই জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করা সম্ভব না।
“বিশেষ করে যখন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংযুক্তির এক ধরণের প্রমাণই যখন পাওয়া যাচ্ছে, সেই অবস্থায় কেবলমাত্র সামরিকভাবে হবে না। একটা রাজনৈতিক কৌশল থাকতে হবে, যাতে করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে যুক্ত করা যায়”।
প্রফেসর রিয়াজ এজন্য সরকারকে একটি জাতীয় ঐক্যমত্যের উদ্যোগ নেবারও পরামর্শ দিচ্ছেন।
“সকলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সেই অন্তর্ভুক্তির একটি পদ্ধতি বের করতে হবে। যাতে করে সমাজের যে সব শক্তি এই সব উগ্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আছে তাদেরকে একত্রিত করা যায়। সমাজেরমধ্যেই আসলে বিভিন্ন ধরণের শক্তি আছে বাংলাদেশের উগ্র সহিংসতার বিরুদ্ধে, তার চেয়ে বড় শক্তি আসলে আর কেউ নেই। সেটাকে যুক্ত করতে পারবে কি না বর্তমান সরকার, সেটা নির্ভর করছে তারা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কি না। তারা রাজনৈতিক ভাবে এটা মোকাবেলা করতে চান কি না। নাকি তারা যে কৌশল গ্রহণ করে আসছেন সেটাকে অব্যাহত রাখতে চান”
বাংলাদেশের সরকার প্রথম থেকেই দেশটিতে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর উপস্থিতির কথা অস্বীকার করে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পর্যন্ত সবাই সবসময়ে বলে আসছে, বাংলাদেশে যত জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয় তার জন্য স্থানীয় জঙ্গি গোষ্ঠী দায়ী। কখনো কখনো তারা বিরোধী দলকেও দায়ী করেন।
জঙ্গি বিরোধী সরকারের এই অবস্থান এবং বর্তমান কৌশল কৌশল কার্যত সফল হচ্ছে না বলে মনে করেন প্রফেসর রিয়াজ।
তিনি বলেন, “এখন সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ দরকার যাতে সমাজের, সিভিল সোসাইটির, বিরোধী দলের সবাইকে একত্রিত করে একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করা যায়।”
“রাজনৈতিক মতপার্থক্যগুলোকে যতদূর সম্ভব দূরে রেখে এবং যতদূর সম্ভব ঐক্যমত্য তৈরি করেই অগ্রসর হতে হবে”। -বিবিসি বাংলা
মন্তব্য চালু নেই