জঙ্গিদের লাশ আপাতত হস্তান্তর নয়
গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে নিহত ছয় জঙ্গির লাশ আপাতত হস্তান্তর করা হবে না। এই লাশগুলো আপাতত রাখা হয়েছে সিএমএইচএ। রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকার এই জঙ্গিদের লাশ হস্তান্তর করার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিবে সেই হিসাবেই ব্যবস্থা নিবে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তাদের পরিবারের কেউ লাশ দাবি না করলে ও নিতে না চাইলে ওই লাশ শেষ পর্যন্ত কি করা হবে সেই ব্যাপারেও ঘটনার প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নিবে।
সূত্র জানায়, যে ছয় জঙ্গি গুলশান হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলো ওই সব জঙ্গিরা বাংলাদেশের বলে পরিচয় জানতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে ওই সব জঙ্গির পরিবারের সদস্যদের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কেউ তার পরিচয় প্রকাশ করে লাশ গ্রহণ করার ব্যাপারে যোগাযোগ করেনি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও ওই সব জঙ্গিদের ব্যাপারে সাইট ইন্টিলিজেন্সে তথ্য এলেও তাদের পরিবারের কারো সঙ্গে এখনও পর্যন্ত যোগাযোগ করেনি তদন্ত কর্মকর্তারা। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তাদের ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছেন। পরিচয় পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পর ও পরিবারের ব্যাপারে তথ্য জানার পর তারা এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
সূত্র জানায়, এই সব লাশ এখনই দাফন করার কোন তাড়া নেই। সরকারের তরফ থেকে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত এমন কোন নির্দেশনা আসেনি। তাছাড়া বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মামলার তদন্তের স্বার্থে জঙ্গিদের ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তাদের অনেক তথ্য জানা দরকার হতে পারে। সেই হিসাবে লাশগুলো সংরক্ষণ করারও প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন সংস্থারও প্রয়োজন হতে পারে। সব মিলিয়ে এই ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করার জন্য জঙ্গিদের ব্যাপারে সরকার তড়িঘড়ি কোন সিদ্ধান্ত নিবে না।
সূত্র জানায়, গুলশানের ঘটনায় ৮-৯ জন জঙ্গি ছিলো বলে হোটেলের স্টাফদের দুইজন ছাদ দিয়ে বেরিয়ে আসার পর জানিয়েছিলো। সেই হিসাবে অভিযান পরিচালনাকারীরা ওখানে তারা ৮-৯ জন জঙ্গির সন্ধান করে। এরমধ্যে ছয় জন ঘটনায় নিহত হয়। বাকি ২-৩ জনকে সুনির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে একজনকে সন্দেহভাজন হিসাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদেরকে আটক করা হয়েছে এরমধ্যে ওই দলের সদস্য কেউ আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া অভিযান পরিচালনার আগে ঘটনার পর পর কোন জঙ্গি ওই জায়গা থেকে বেরিয়ে গেছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র বলছে, ঘটনার পর ওই রেস্টুরেন্টের চারদিকসহ বিভিন্ন দিকে এমনভাবে নিরাপত্তা বেস্টনী দেওয়া হয়েছিলো সেখান থেকে কারো পালানোর সুযোগ ছিল না। তারপরও যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই ব্যাপারে আরো প্রয়োজনীয় তথ্য জানা যাবে।
জঙ্গিদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে ওই সব জঙ্গিদের পরিবারের কেউ সেনাবাহিনী প্রভোষ্ট মার্শালের সঙ্গে লাশের ব্যাপারে যোগাযোগ করেছে কিনা জানার চেষ্টা করা হলে সূত্র জানায়, বিদেশি ও দেশি যেই সব নাগরিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করছেন, তাদের কর্তৃপক্ষও যোগাযোগ করছে। তবে জঙ্গিদের লাশ তাদের সন্তান ও কিংবা পরিবারের সদস্য বলে কেউ এখনও দাবি করেনি।
সূত্র জানায়, জঙ্গিদের পরিবারের কোন সদস্য যোগাযোগ করলে এই ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কথা বলবেন।
মন্তব্য চালু নেই