গুম ও খুনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত: ফখরুল
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপিকে নির্মূল করতেই সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে অপহরণ, গুম ও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। তারা এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে চলমান গণ-অনশন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে গুম, খুন ও অপহরণের প্রতিবাদে এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী এ গণ-অনশন কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। প্রেসক্লাবে এ গণ-অনশন কর্মসূচিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নিচ্ছেন। কর্মসূচি চলছে দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলাতেও।
বিকেল ৪টায় গণ-অনশন কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। টানা এ সাত ঘণ্টার গণ-অনশন শেষ হবে বিকেল ৫টায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, অপহরণের মতো ঘটনাগুলো একের পর এক ঘটছে বলে মানুষ তার মৌলিক অধিকারগুলো হারিয়ে ফেলছে। দেশের মানুষের মাঝে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ভয়ভীতি দেখিয়ে বিরোধী দলকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে, নেতা-কর্মীদের নামে অহেতুক মামলা দেওয়া হচ্ছে, বাংলাদেশে শুধু একা তারাই থাকবে, অন্য কেউ থাকবে না- এই ধরনের মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু এই পরিস্থিতি দীর্ঘ সময় চলবে না। দেশের জনগণ এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে শিগগির প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটানো হবে।
নারায়ণগঞ্জের ঘটনা জাতির বিবেককে নাড়া দিয়েছে বলে জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে সারাদেশে অসংখ্য মানুষকে গুম করা হয়েছে। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ আমাদের দলের কয়েকশ’ নেতাকর্মী গুম করা হয়েছেন। এদের লাশ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে ও সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলারক্ষকারী বাহিনী পরিচয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। আইনশৃঙ্খলারক্ষকারী বাহিনী সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনার তদন্ত ছাড়াই তিনি (স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী) যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন, এরপর তদন্ত সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সমগ্র দেশ এ সরকারের বিপক্ষে। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে।
অনশনে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসূফ, সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, যুগ্ম-মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমুদ্দিন আলম, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এসএম ওবায়দুল হক নাসির, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক শাহ নেসারুল হক প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই