গুজব ছড়িয়ে দুই শিক্ষককে জেল খাটান আ. লীগ নেতা

‘আমি একজন শিক্ষক। আমি কেন কোনো ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করতে যাবো। সব ধর্মকে সম্মান করতে যদি না পারি, তবে এই জন্ম বৃথা,’ বাগেরহাটের চিতলমারী থানার হিজলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণপদ মহলির বক্তব্য এটি। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে সম্প্রতি জেল খেটেছেন তিনি। অথচ তিনি জানতেনই না কী ঘটেছিল সেদিন!

ওই দিনের ঘটনার নেপথ্য রহস্য উদ্ধার করতে যেয়ে বেরিয়ে আসছে স্থানীয় আওয়ামী লিগ নেতা লিটন গাজীর গুজব ছড়ানোর বিষয়টি।

ঘটনার কিছুদিন আগে ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন হয়। তাতে পরাজিত দলের লোকজন ক্ষিপ্ত হন স্কুলের কয়েকজন শিক্ষকের ওপর।

যেদিন কটূক্তির গুজব ছড়ানো হয়, সেদিন স্কুলে ছিলেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণপদ মোহলি। স্কুলে আসতেই লিটন গাজীর নেতৃত্বে তার ওপর হামলা চালানো হয়।

ওই দিন গোটা চিতলমারী জুড়ে চাউর হয়, বোয়ালিয়া স্কুলের গণিতের শিক্ষক অশোক কুমার ঘোষাল ইসলাম ধর্ম নিয়ে বাজে কথা বলেছেন। অথচ তিনি কী বলেছেন, তা কেউ শুনতে চাননি। এরপর প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসলেই তার ওপর হামলা করা হয়। বলা হয়, তিনিও নাকি ওই শিক্ষকের পক্ষ নিয়েছেন। এরপর পুলিশ তাদের উদ্ধার করে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ. আনোয়ার পারভেজের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করেন।

প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণপদ আনোয়ার পারভেজকে বলেন, ‘স্যার আমার কিছু কথা আছে।’ আনোয়ার পারভেজ তাকে লিখিত দিতে বলেন। এরপর ওই শিক্ষক লিখিত দিলেও তা গ্রহণ না করে কারাগারে পাঠানো হয়!

জানতে চাইলে আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাদা কাগজে বক্তব্য নেয়ার কোনো বিধান নেই। আমি স্কুলের সাতজন শিক্ষার্থীর বক্তব্য শুনেছি। তাদের দাবি গণিতের শিক্ষক ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন।’

গণিতের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও প্রধান শিক্ষককে কেন শাস্তি দেয়া হলো? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলছেন, ‘উনি পক্ষ নিয়েছিলেন।’



মন্তব্য চালু নেই