গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে ছাত্র ভর্তির দাবি ছাত্রীদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত আজিমপুরের গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে এ বছর থেকে ছাত্র ভর্তি করে সহশিক্ষা কার্যক্রম (কো-এডুকেশন) চালুর দাবি জানিয়েছেন কলেজের ছাত্রীরা।

বুধবার দুপুরের দিকে এ দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেন তারা। এর আগে বেলা ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত কলেজের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে ভেতরে বিক্ষোভ করেন ছাত্রীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধীনে স্বতন্ত্র ইনস্টিটিউটের মর্যাদার দাবি বাস্তবায়নে কো-এডুকেশন পূর্ব শর্ত হওয়ায় এ দাবি জানান ছাত্রীরা।

তারা বলছেন, এর আগে একাধিকবার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের স্বতন্ত্র ইনস্টিটিউটের মর্যাদা দাবি করে আন্দোলন হয়েছিল। কিন্তু কো-এডুকেশন পূর্ব শর্ত হওয়ায় তা ব্যর্থ হয়।

আন্দোলনরত ছাত্রীরা বলেন, কয়েক বছর ধরে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি আলাদা ইউনিটের অধীনে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা চালু করে। কিন্তু পরীক্ষার বাইরে এর কোনো দায়-দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় নেয় না।

প্রতিষ্ঠানের বেতন, হোস্টেল ফিসহ সব কিছু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক বেশি। এসব সমস্যার সমাধানে সব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়ে কলেজটিকে ইনস্টিটিউট করার দাবি তাদের।

তবে ছাত্রীদের দেওয়া এবারের স্মারকলিপিতে ছেলেদের ভর্তি করার দাবির সঙ্গে ইনস্টিটিউট করার দাবি নেই বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ছাত্রীরা আমাকে বলেছেন, গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়টি শুধু মেয়েদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। তাই তারা ছেলেদের ভর্তি করার কথা জানায়। কিন্তু এবার তারা ইনস্টিটিউটের দাবির কথা বলেনি।”

এদিকে সহশিক্ষা চালুর দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরসহ স্মারকলিপিটির সঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ শামসুন্নাহার স্বাক্ষরিত একটি সংযুক্তি ঢাবি উপাচার্য ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিনের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ওই সংযুক্তিতে বলা হয়, “গাহস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ‘উপাদানকল্প’ একটি কলেজ। অত্র কলেজে ১৯৬১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মহিলাদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে। বর্তমানে কলেজের ছাত্রীরা ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ হতে কো এডুকেশন চালুর ব্যাপারে একটি আবেদনপত্র দাখিল করেছে।”

এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ শামসুন্নাহার বলেন, সকালে কলেজের ছাত্রীরা তার কাছে স্মারকলিপি নিয়ে এসে তাতে সই করার জন্য চাপ দেওয়ায় তিনি সই করেছেন।

তবে এ ব্যাপারে তার কোনো সায় নেই জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, “ছাত্রীদের বলেছিলাম, সরকারকে এ বিষয়ে আগে অবহিত করতে হবে। তারা এই সেশন থেকে ছাত্রদের ভর্তি করতে হবে বলে দাবি জানাচ্ছে।”

এ বিষয়টি আগে কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলে তুলে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা হঠাৎ করে করা সম্ভব নয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে।”

ছাত্র-ছাত্রীদের একসঙ্গে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে কলেজের শিক্ষার পরিবেশ ‘নষ্ট’ হবে বলে মন্তব্য করেন অধ্যক্ষ শামসুন্নাহার।

“তারা শুধু কো-এডুকেশন চালুর কথাটি বলেছে, এতে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে বলে ছাত্রীরা বলছে। আমি ছাত্রীদের বলেছিলাম, অনেক বছর ধরে ছাত্রীরা এই কলেজে পড়াশুনা করছে। কো-এডুকেশন চালু হলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে।”



মন্তব্য চালু নেই