‘গণতন্ত্র বিজয় দিবসে’ মাঠ দখলে রাখতে চায় আ’লীগ

বহুল আলোচিত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজনীতির মাঠ দখলে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরইমধ্যে দেশের সর্বস্তরে ‘গণতন্ত্র বিজয় দিবস’ পালন করতে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অন্যদিকে ওই নির্বাচন প্রত্যাখান করা বিএনপিকে তাদের ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনে কোনো সুযোগ দিতে চায় না দলটি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ানি আওয়ামী লীগ সরকার অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টিসহ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের শরীকরা অংশ নিলেও বিএনপিসহ অন্য দলগুলো তা প্রত্যাখান করে। এসময় নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করে ৫ জানুয়ারির আগে ও পরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট আন্দোলনে নেমেছিল। আন্দোলনে জ্বালাও-পোড়াওসহ নানা কারণে অসংখ্য প্রাণহানির ঘটনায় তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে টানা দুইবছর উত্তপ্ত করে রেখেছিল।

পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনের দিনটিকে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা শুরু হয়। অন্যদিকে বিএনপি দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

দুই বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রতিবছরই দিনটিকে ঘিরে পৃথক কর্মসূচি নিয়ে মাঠ দখলে রাখার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। গতবছর নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সমাবেশের পথ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল পুলিশ।

এবারও দুটি দলই দিনটিকে ঘিরে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে চাইছে। এরইমধ্যে ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে ৫ জানুয়ারীকে ঘিরে ব্যাপক কর্মসূচি প্রদানের পরিকল্পনা নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার দিনটিতে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি প্রদান করতে চায়।

সম্প্রতি দলটির এক যৌথ সভায় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ৫ জানুয়ারিতে গণতন্ত্রেরর বিজয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশে সকল জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আপনারা সমাবেশ করবেন।

এছাড়া দিনটিতে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ রাজধানীর রাসেল স্কয়ারে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ করবে বলেও তিনি জানান।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে বিএনপির ‘নৈরাজ্যের’ আন্দোলনের দিকগুলো তুলে ধরা হবে। অন্যদিকে ওই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখা আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তথ্যও নতুন করে তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি বিএনপি কোনো ধরনের কর্মসূচি পালন করতে চাইলে তা প্রতিরোধ করা হবে বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

এ বিষয়ে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, ৫ ই জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি ভুল করেছে। আর ঐদিন যদি গণতন্ত্রের হত্যা চেষ্টা হয়ে থাকে- তবে সেটি করেছে বিএনপি। কারণ ঐ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তারা মানুষকে শান্তিতে ভোট দিতে দেয়নি। ভোট কেন্দ্র জালিয়ে দিয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারকে হত্যা করেছে। আমরা গনতন্ত্র রক্ষা করেছি, আর বিএনপি জালাও পোড়াও এর মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, বিএনপিকে এই দিবস নিয়ে কোন ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না।



মন্তব্য চালু নেই