গণতন্ত্র নির্বাসিত : খালেদা জিয়া

দেশে এখন কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষের অধিকারই নিশ্চিত নয় দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন নির্বাসিত, গণতান্ত্রিক প্রথা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই অবস্থার অবসানের জন্য, সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অংশ নেয়ার জন্য এই মহান মে দিবসে আমি দেশের শ্রমজীবী ভাই-বোনদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।’

মহান মে দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বানীতে তিনি এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবারের এই বিবৃতিতে দলটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপনের স্বাক্ষর রয়েছে।

খালেদা জিয়া বলেন, একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ছাড়া শ্রমজীবীসহ কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। আর তাই সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন স্বাভাবিকভাবেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সঙ্গে একাকার হয়ে যায়।

মে দিবসে দেশ-বিদেশে কর্মরত সকল বাংলাদেশি শ্রমিক-কর্মচারী এবং বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান বেগম জিয়া। একই সঙ্গে তাদের উত্তরোত্তর সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করেন।

বিএনপি প্রধান বলেন, ‘এ দিনটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ১৮৮৬ সালে মে মাসে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমেরিকার শিকাগো শহরে ‘হে মার্কেটে’ জীবনদানকারী এবং অন্যায় বিচারে ফাঁসি দিয়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে সেইসব প্রতিবাদী শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। এই দিনে রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনসে শোচনীয়ভাবে নিহত ভাই-বোনদের কথাও আমি গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করছি।’

মে দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকভাবে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা বিস্মিত হই যে, শ্রমজীবী মানুষের রক্তঝরা ঘামেই বিশ্ব সভ্যতার বিকাশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। তাদের অবদানের ফলেই বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। অথচ গভীর পরিতাপের বিষয় আজও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিপীড়িত শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান ও শ্রমের মর্যাদা স¤পর্কে সব সময় ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় এবং তা রক্ষায় আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পালনে কখেনোই পিছ পা হইনি।’

‘মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিজেকে সবসময় একজন শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব ও স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন। শ্রমিকদের দুটো হাতকে তিনি উন্নয়নের চাবিকাঠি ভাবতেন। এদেশের শ্রমজীবী ও পরিশ্রমী মানুষের কল্যাণে তিনি যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। আমাদের দলের পতাকায়ও তার স্বীকৃতি রয়েছে’ বলেন তিনি।

ক্ষমতায় থাকাকালীন তার সরকার এদেশের শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে কি পদক্ষেপ নিয়েছে তাও উল্লেখ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। আগামীতেও এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, ন্যায্য মজুরি এবং স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ অর্জনসহ সকল ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামে সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।



মন্তব্য চালু নেই