খুলনায় নিরীহ যাত্রীদের কুপিয়ে জখম

খুলনা শহরে বুধবার রাতে সরকার-দলীয় দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে তারা একটি পরিবহনের কাউন্টারে হামলা চালায়। নির্বিচারে তাদের মারধর ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে যাত্রী ও কাউন্টারের কর্মচারীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

রাত নয়টার পর শহরের রয়েল মোড় ও সাতরাস্তা মোড়ের মাঝামাঝি ঈগল পরিবহনের কাউন্টারে এ হামলা হয়।

ঈগল পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক শাহাবুদ্দিন বাবুর ভাষ্য, রাত সোয়া নয়টা থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যে এই হামলা হয়। হামলাকারীরা সবাই আওয়ামী লীগের লোকজন। হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে যাত্রী ছাড়াও কাউন্টারের কর্মচারী রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, আহত কয়েকজনের জখম গুরুতর। আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে খুলনা সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জেড এ মাহমুদ ডনের বাড়িতে হামলা হয়। এতে তিনজন আহত হন। এ ঘটনায় রাতে খুলনা সিটি কলেজকেন্দ্রিক ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত শেখ পলাশের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন ডন। সেখান থেকে ডনের লোকজন রয়েল মোড়ে এলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া এবং ফাঁকা গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল ঈগল পরিবহনের কাউন্টারে হামলা চালায়। এতে সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা কাউন্টারের কর্মচারী এবং অপেক্ষমাণ যাত্রীদের মারধর ও কুপিয়ে জখম করে।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঈগল পরিবহনের কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার মেঝেতে জমাটবাঁধা রক্ত আর কাচের টুকরো ছড়িয়ে আছে। এর মধ্যেই বসে আছেন আতঙ্কগ্রস্ত কয়েকজন যাত্রী। সন্তান কোলে এক নারী যাত্রী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘কিছুই বুঝতে পারলাম না। চাপাতি আর গরু জবাই করার ছোরা দিয়ে ওরা যারে পাইছে, তারেই কুপাইছে। আমি বাচ্চা নিয়ে তখন বাথরুমে লুকাইছি।’

ঘটনাস্থলে এতেকাফ (৩৮) নামের আরেক যাত্রীকে পাওয়া গেল। তাঁর বাঁ চোখ ও পিঠে মারাত্মক জখমের চিহ্ন।

নাম প্রকাশ না করা এক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, ফিরে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা স্লোগান দিচ্ছিল, ‘ডন ভাইয়ের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে।’

ডন ও পলাশের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেছেন খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। প্রতিপক্ষের লোকজন কাউন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন ভেবেই হয়তো সেখানে হামলা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই