১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন শুরু :

ক্ষুধা-দারিদ্র্য দূর করার ওপর জোর শেখ হাসিনার

দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে রাজনীতিক সদিচ্ছার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সার্কের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ক্ষুধা ও দারিদ্র্য।

স্বাস্থ্য, কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তনসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে তার সরকার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার কাঠমান্ডুর সিটি হলে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) দুই দিনব্যাপী (২৬-২৭ নভেম্বর) ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা সার্ক দেশগুলোর মানুষের দারিদ্র্য দূর করতে ‘সার্ক ফুড ব্যাংক’ ও ‘সার্ক সিড ব্যাংক’ কে কার্যকর করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও দারিদ্র্য নির্মূলে প্রধান খাদ্য শস্য উৎপাদন, অভ্যন্তরীণ মৎস্য ও প্রানিজ সম্পদ উৎপাদন, কৃষিতে পানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

তিনি তার সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। ২০৪১ সালে হবে এক উন্নত দেশ।

আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সার্ক সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী হলে অন্যান্য সহযোগিতা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তরান্বিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সার্বিক শান্তি, উন্নতি ও স্থিতিশীলতার জন্য পরস্পরের মধ্যে ভৌত ‘কানেকটিভিটি’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আঞ্চলিক মোটরযান পরিবহণ চুক্তি ও রেল পরিবহণ চুক্তি হলে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে।

তিনি বলেন, ‘কানেকটিভিটি’ কে বাংলাদেশ বিস্তৃত পরিসরে চিন্তা করে। আমরা পারস্পরিক আইডিয়া, জ্ঞান, প্রযুক্তি, সাংস্কৃতিক কানেকটিভিটি, জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযুক্তি, সড়ক-রেল-আকাশ পথে কানেকটিভিটি, পণ্য পরিবহণ, সেবা ও বিনিয়োগের কানেকটিভিটিতে বিশ্বাস করি।

শেখ হাসিনা বলেন, সার্ক নেতাদের কাছে আমার প্রত্যাশা একই মঞ্চে থেকে আঞ্চলিক ‘কানেকটিভিটি’ কে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, আইসিটি, বৈশ্বিক উষ্ণতা রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘সার্ক দেশগুলোর মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হওয়া এখন খুবই প্রয়োজন, যাতে পারস্পরিক সহযোগিতা থাকবে। এতে এসব দেশের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়বে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমাদের নন-ট্যারিফ এবং প্যারা-ট্যারিফ বাধাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করার প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমাদের জনগণ শক্ত পদক্ষেপ দেখতে চায়। তারা প্রক্রিয়ার চেয়ে ফলাফলটা বেশি দেখতে চায়।

আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগের মাধ্যমে সার্কভুক্ত দেশগুলোর বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করার কথা সার্কের শীর্ষ নেতাদের সামনে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা জ্বালানি চাহিদা মেটাতে জল বিদ্যুৎকে কাজে লাগাতে পারি। ভবিষ্যতে আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে একসঙ্গে কাজ করে লাভবান হতে চাই।

দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের সমৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ গুরুত্বপূর্ণ, এমন মত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সার্ক কাঠামোর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা প্রশংসনীয়।



মন্তব্য চালু নেই