ক্যাবল অপারেটররা চলচ্চিত্র সম্প্রচার করতে পারবে না : তথ্যমন্ত্রী
দেশের ৬৪টি জেলার ক্যাবল টিভিতে অবৈধভাবে দেশি-বিদেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। একই সঙ্গে ছায়াছবির নাম ও কাহিনি নকল করা থেকে বিরত থাকতে নির্মাতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নকল প্রবণতা ও ভিডিও পাইরেসি রোধ এবং চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণ শীর্ষক সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
অবৈধভাবে চলচ্চিত্র সম্প্রচারকারী ক্যাবল অপারেটরদের হুঁশিয়ার করে তথ্য মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার চলচ্চিত্রের উন্নয়নের লক্ষ্যে এ খাতকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ শিল্প রক্ষায় সরকার আন্তরিক। এখন থেকে কোনো ক্যাবল টিভিতে দেশি-বিদেশি ছায়াছবি প্রচার করা হলে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো তদবির কাজে আসবে না।’
এ সময় প্রযোজক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধ সম্প্রচারকারী অপারেটরদের তালিকা তৈরি করে অভিযানের নির্দেশ দেন।
প্রতিটি প্রেক্ষাগৃহকে ডিজিটালে রূপান্তরের চেষ্টা চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি সিনেমা বানিয়ে এবং প্রদর্শন করে প্রযোজক এবং প্রদর্শক উভয় পক্ষই যাতে লাভবান হয় সে উদ্যোগ সরকার নিচ্ছে।’
এ সময় চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশকরা জানান, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণ ব্যয়বহুল।চলচ্চিত্র তৈরিতে আমরা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে থাকি। সেন্সর সনদপত্র পাওয়ার পর দেশের প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্র মুক্তি পাবে এবং দেশের জনগণ মানসম্মত ছবি উপভোগ করার সুযোগ পাবে। বিনিয়োগ করা অর্থ লাভসহ ফেরত আসবে এবং সংশ্লিষ্ট প্রযোজক নতুন চলচ্চিত্রে অর্থ বিনিয়োগে উৎসাহিত হবেন। সেন্সর প্রদর্শনীতে কোনো কোনো চলচ্চিত্র এবং কোনো কোনো চলচ্চিত্রের অংশ বিশেষ নকল প্রমাণিত হওয়ায় সেসব চলচ্চিত্র সেন্সর সনদপত্র পায় না। এ ছাড়া কোনো চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়ার পরই ভিডিও পাইরেসি হয়ে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রদর্শণ করায় সিনেমা হলে দর্শক কমে যায়। এর ফলে চলচ্চিত্র নির্মাণের লক্ষ্য পুরণ হয় না এবং সংশ্লিষ্ট প্রযোজক বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির শিকার হন। চলচ্চিত্র শিল্পের যথাযথ বিকাশ ও এ খাতে প্রযোজকদের আর্থিক ক্ষতি বা ঝুঁকি নিরসনের জন্য নকল ছবি নির্মাণ রোধের পাশাপাশি ভিডিও পাইরেসি রোধে সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রয়াস সুনির্দিষ্ট করা অত্যন্ত জরুরি।’
সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী জানান, ‘এখন থেকে চলচ্চিত্র প্রযোজকদের বাধ্যতামূলক কপিরাইট সনদ গ্রহণ কতে হবে। পাইরেসি সংশ্লিষ্ট অপরাধ জামিন অযোগ্য করাসহ অনলাইন ও ইউটিউবে পাইরেসিকৃত ভিডিও বা চলচ্চিত্র কপিরাইট আইনে অন্তর্ভুক্ত করে আইন সংশোধনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চলচ্চিত্রের অশ্লীলতা ও পাইরেসি রোধকল্পে গঠিত টাস্কফোর্সের কার্যক্রম জোরদার করা এবং সব জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রধান এবং থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ক্যাবল টিভির অবৈধ ছবি প্রচার রোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্দেশনা, চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য পাণ্ডুলিপি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য পরিচালক সমিতি যথাযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করবে।
সভায় প্রধান তথ্য কমিশনার মোহাম্মদ ফারুকসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির নেতৃবৃন্দ, পুলিশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য চালু নেই