কোথা থেকে এলো সৌরজগতের নবম গ্রহটি?

বছরখানেক আগে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের বাইরের প্রান্তে লুকিয়ে থাকা একটি নবম গ্রহের অস্তিস্ত্বের কিছু প্রমাণ পান। এই গ্রহটাকে আদতে খুঁজে পাওয়া যায়নি, কিন্তু এর অস্তিত্ব এবং উৎসের ব্যাপারে বিজ্ঞানীদের জল্পনা কল্পনা চলছে পুরোদমে।

আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সায়েন্স মিটিং এ উপস্থাপন করা হয় এ সম্পর্কিত একটি সিমুলেশন। এতে দেখানো হয়, এই গ্রহটি হয়তো একা একাই ঘুরে বেড়াচ্ছিল, তাকে নিজের দিকে টেনে এনেছে আমাদের সূর্য।

যদি এই গ্রহের অস্তিত্ব আসলেই থাকে, তাহলে তা হবে পৃথিবীর ১০ গুণ বড় এবং সূর্য থেকে পৃথিবীর যে দূরত্ব, তার থেকেও এক হাজার গুণ দূরে। প্লুটো সে তুলনায় মাত্র ৪০ গুণ দূরে, সুতরাং এই গ্রহটি সূর্য থেকে অনেক বেশিই দূরে বই কী। কিন্তু সে এত দূরে গেল কীভাবে?

একটি সম্ভাবনা রয়েছে, যে এই গ্রহটি একেবারে শূন্যের মাঝেই তৈরি হয়েছে। কিন্তু এই “প্ল্যানেট নাইন” এর খোঁজ করছেন যে বিজ্ঞানীরা- জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাইক ব্রাউন এবং ক্যালটেকের জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী কনস্টান্টিন ব্যাটিজিন ভাবছেন এটা হয়তো ছিটকে পড়া এক যাযাবর। তাদের তত্ত্ব অনুযায়ী, এই নবম গ্রহ হয়তো সূর্যের কাছাকাছিই তৈরি হয়েছিল (অন্য সব গ্রহের মতো), কিন্তু ভিড়-ভাট্টায় ধাক্কাধাক্কিতে সে বাইরের দিকে ছিটকে চলে যায়।

আরেকটি সম্ভাবনা হলো, এই গ্রহকে হয়তো আমরা “অপহরণ” করে এনেছি। হয়তো তার নিজস্ব কোনো তারকা ছিল না, সে একা একাই ঘুরে বেড়াচ্ছিল মহাবিশ্বে। কিন্তু একটা সময়ে সে সূর্যের টানে বাঁধা পড়ে যায় এবং সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে।

মেক্সিকো স্টেট ইউনিভার্সিটির জেমস ভেসপার এবং পল মেসন সিমুলেশনের সাহায্যে বোঝার চেষ্টা করেন বিভিন্ন আকার-আকৃতির এমন একাকী গ্রহ আমাদের সৌরজগতের আশেপাশে এলে কী হতে পারে। তারা ১৫৬টি সিমুলেশন চালান। এতে দেখা যায়, ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই একাকী গ্রহ সৌরজগৎ থেকে ছিটকে বাইরের দিকে চলে যায়। এমনকি অনেক সময় সৌরজগৎ থেকে কোনো একটি গ্রহকে ছিনতাই করে নিয়ে যায়। কিন্তু বাকি ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই গ্রহ আমাদের সৌরজগতের অংশ হয়ে পড়ে। তাদের এই সিমুলেশনের ফলাফল এখনো কোনো জার্নালে প্রকাশিত হয়নি।

পূর্বের আরেকটি গবেষণায় দেখা যায়, প্ল্যানেট নাইনকে আমরা বাইরে থেকে ধরে নিয়ে এসেছি এমনটা হবার সম্ভাবনা ২ শতাংশেরও কম। এ কারণে এখনো ঠিক করে বলা যাচ্ছে না এই গ্রহ আসলে কোথা থেকে এসেছে। গবেষকেরা আশা করছেন এই গ্রহের অস্তিত্ব আসলেই আছে এবং তাকে আমরা খুঁজে পাব।

সূত্র : পপুলার সায়েন্স



মন্তব্য চালু নেই