কোকোর কবরে সবুজ ঘাস
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবরে বুধবার সকাল থেকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী কবরস্থানে কোকোকে সমাহিত করা হয়। এর আগে বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হয়।
আজ বনানী কবরস্থানে গিয়ে দেখা যায়, কোকোর কবরের চারপাশে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। মাটি দিয়ে কবরটি উঁচু করা হয়েছে। ছোট ছোট সবুজ ঘাস দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে পুরো কবর। সকাল থেকে অনেক মানুষকে সেখানে যেতে দেখা গেছে। কেউ কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে ছিলেন, কেউ-বা দীর্ঘ সময়। অনেকে কবরের সামনে দাঁড়িয়ে দোয়া পাঠ করেছেন। তবে দুপুর পর্যন্ত সেখানে দলের কোনো শীর্ষ নেতাদের দেখা যায়নি।
বনানীর সিটি করপোরেশন কবরস্থানের তত্ত্বাবধায়ক মফিজুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাতের পর আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতা বা কোকোর পরিবারের কেউ কবরস্থানে আসেননি। অনেক সাধারণ মানুষ এখানে এসে দোয়া করে গেছেন।
মফিজুল ইসলাম জানান, বাড়তি মাটি দিয়ে কোকোর কবর উঁচু করা হয়েছে। সকালে কবরের ওপর সবুজ ঘাসের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। কবরের চারদিক বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে।
কবরটি পাকা করা হবে কি না, এ ব্যাপারে কোকোর পরিবার বা দলের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি বলে উল্লেখ করেন বনানীর সিটি করপোরেশন কবরস্থানের এই তত্ত্বাবধায়ক।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা আবদুল বারী বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে হিসেবে কোকোর কবর সংরক্ষণ করা হতে পারে।
কোকোর কবর পাকা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শাইরুল কবীর খান। তিনি জানান, কোকোর কুলখানি কবে ও কখন অনুষ্ঠিত হবে, এ ব্যাপারে আজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩০ জানুয়ারি গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ আসর কোকোর কুলখানি অনুষ্ঠিত হতে পারে।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের আনাগোনা দেখা যায়নি। সকাল থেকে এই সময় পর্যন্ত দল কিংবা জোটের শীর্ষ কোনো নেতা কার্যালয়ে আসেননি বলে জানা গেছে।
আগের দিন কার্যালয় ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা থাকলেও আজ তার ছিটেফোঁটাও লক্ষ করা যায়নি। কার্যালয়ের ফটকের সামনে পুলিশের চার কনস্টেবলকে অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান গত শনিবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরদিন মালয়েশিয়ায় তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তিন দিন পর গতকাল দুপুর পৌনে ১২টায় তাঁর মরদেহ ঢাকায় আসে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা মরদেহ গ্রহণ করেন। এ সময় সেখানেও বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী জড়ো হন। মরদেহের সঙ্গে একই ফ্লাইটে আসেন কোকোর স্ত্রী ও দুই মেয়ে, মামা শামীম এস্কান্দার।
বিমানবন্দর থেকে কোকোর মরদেহ বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে বেলা পৌনে তিনটায় ছেলের মরদেহকে শেষ বিদায় দেন মা খালেদা জিয়া। সেখান থেকে বিপুলসংখ্যক দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকের ভিড় ঠেলে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা পর বিকেল পৌনে পাঁচটায় মরদেহ পৌঁছায় বায়তুল মোকাররমে। সেখানে জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা সালাহউদ্দিনের ইমামতিতে সোয়া পাঁচটায় জানাজা হয়। একই সঙ্গে বিএনপির উদ্যোগে সারা দেশে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররম মসজিদের জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন।
মন্তব্য চালু নেই