কেন ভাবা হত, কন্যাশিশু জন্মদান করা পাপ?

ইসলাম-পূর্ব আরবে যখনই কোনো কন্যাশিশু জন্মলাভ করত, তাদের বেশিরভাগকেই জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো। ইসলামের আগমনে এ প্রথা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই যুগেও জাহেলি যুগের প্রথা চালু রয়েছে। পত্রিকার পাতায় প্রায়ই খবর আসে, কন্যা জন্মদানের অপরাধে মা-মেয়েকে হত্যা করেছে পাষণ্ড বাবা। কিংবা পাচারকারীর কবল থেকে বিপুল সংখ্যক নারী-শিশু উদ্ধার। কন্যা ও নারীদের প্রতি এ ধরনের পৈশাচিক মনোভাব ইসলাম সমর্থন করে না। ইসলাম সব ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরোধী। তার পরও আলাদাভাবে নারী শিশুকে হত্যা করতে নিষেধ করেছে। এ প্রসঙ্গে সূরা তাকভীরের ৮ ও ৯ নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হলো? সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক আচরণের ক্ষেত্রে এ দুইয়ের মধ্যে কোনোরূপ পার্থক্য ইসলাম সমর্থন করে না।

হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] ছেলে ও মেয়ের মধ্যে পার্থক্য বিধান এবং মেয়েদের ওপর ছেলেদের অহেতুক প্রাধান্যদান কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, যার তত্ত্বাবধানে কোনো কন্যা শিশু থাকে আর সে তাকে জীবিত দাফন না করে, তার প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শন না করে… আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।-আবু দাউদকোরানে কারিমের বিভিন্ন স্থানে তাদের মর্যাদার কথা উল্লেখ রয়েছে। এমনকি কোরানে কারিমে সূরাতুন নিসা নামে একটি স্বতন্ত্র সূরাও স্থান পেয়েছে। নারী শিক্ষা সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, নর-নারী সকল মুসলমানের ওপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ। [মিশকাত]

বর্তমান সমাজে কন্যা শিশুদের ওপর যেসব নির্যাতন করা হয়, তন্মধ্যে পাচার অন্যতম। নারী ও শিশু পাচাররোধে ইসলাম কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। নারী ও শিশু পাচার একটি মহা অন্যায় ও হারাম কাজ। মানব পাচারকারী চক্র জনগণের বিশ্বাসের চরম অবমাননা ও অবমূল্যায়ন করে থাকে। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, এর চেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা আর কিছুই নেই যে তুমি এমন ব্যক্তির সঙ্গে মিথ্যার আশ্রয় নেবে, যে তোমাকে বিশ্বাস করে। [আবু দাউদ] সমাজে নারীদের তাবৎ অধিকার নিশ্চিত করতে ও পাচারের মতো জঘন্য অপরাধ দমন করতে ইসলাম প্রদত্ত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, গণসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক প্রতিরোধ অত্যন্ত প্রয়োজন।

সূত্র : প্রিয়.ইসলাম



মন্তব্য চালু নেই