কুয়াকাটাকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ

বাংলাদেশের অনন্য দর্শনীয় স্থান পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে কুয়াকাটাকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে মাস্টার প্ল্যান। আগামী ১০০ বছরে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সমুদ্র সৈকতের অবস্থা কী হবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে মাস্টার প্ল্যানে।

এছাড়া নদীবেষ্টিত এই জায়গায় পায়রা নৌবন্দর থাকায় এটি সব দিক দিয়েই উপযুক্ত পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে অবকাঠামোগতভাবে এ অঞ্চল এখনো অনেক পিছিয়ে থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়রা।

এই স্থানটিকে পরিচিত করতে এখন সেখানে চলছে মেগা বিচ কার্নিভাল কুয়াকাটা ২০১৭। এ উপলক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ এখন পটুয়াখালীতে অবস্থান করছেন।

রোববার সকালে অর্থমন্ত্রী কুয়াকাটার গঙ্গামতির চরে সূর্যোদয় দেখতে যান। সেখানে কথা হয় জাগো নিউজের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে।

তিনি জানান, কুয়াকাটাকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একটি মাস্টারপ্লান করা হয়েছে। কুয়াকাটা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে। তাই এর মাস্টার প্ল্যান নিয়ে এখনই কাজ করতে হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আন্তরিক। এর আগে তিনিই (প্রধানমন্ত্রী) এটিকে পর্যটন স্পট হিসেবে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে উদ্যোগ নেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই পর্যটন স্পটকে আকর্ষণীয় করে তুলতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’

তবে কুয়াকাটার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দেশের অন্যান্য জেলার জায়গাগুলোর তুলনায় সেখানকার রাস্তাঘাট খুবই জরাজীর্ণ। এখনও অধিকাংশ রাস্তা কাঁচা। কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের শেষপ্রান্তে অবস্থিত এই জায়গায় এখনো কোনো রিকশা চলে না। ভ্যানে সেখানকার অধিবাসীরা যাতায়াত করেন। এজন্য পর্যটকদেরও ভ্যানে উঠতে হয়। আর সেখান থেকে বিভিন্ন স্পটে যাওয়ার একমাত্র বাহন মোটরসাইকেল। রাস্তাঘাটের অবস্থা ভালো নয় বলে মোটরসাইকেলে যাতায়াত করতে হয়। তবে কয়েকটি জায়গায় সব সময় মোটরসাইকেলে যেতে হবে।

সেখানকার অধিবাসী মকবুল হোসেন সমুদ্র সৈকতে একটি রেস্তোরাঁ চালান। তিনি বলেন, রাস্তার অবস্থা ভালো না হওয়ায় প্রায়ই পর্যটকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু প্রতিবার নির্বাচনের সময় নেতারা রাস্তা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পালন করেন না।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী থেকে হওয়া জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি বলেন, ‘কুয়াকাটা জায়গাটা দেশের অন্য এলাকার মতো নয়। প্রতি বছর এখানে সাগর তীর ছাড়াও নদীর তীরে ভাঙন হয়। তাই রাস্তাঘাট বেশিদিন ভলো থাকে না। তবে বর্তমান সরকার অনেক কাজ করছে। এখন সব রাস্তা আগের চেয়ে উন্নত।’

জানা যায়, সেখানে মাস্টারপ্লান বাস্তবায়নের জন্য কুয়াকাটা ইউনিয়ন ছাড়াও পাশের আরেকটি ইউনিয়নে জমি বেচাকেনা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম গোলাম ফারুক বলেন, ‘পাশেই পায়রা সমুদ্র বন্দর থাকায় কুয়াকাটা একটি আদর্শ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে। আর মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নে এখানকার জমি বেচাকেনা বন্ধ রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই