কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে যাবেন না কণ্ঠশিল্পী আসিফ

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর বিজয়ে বড় ভূমিকা রাখা দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর এবার আর সাক্কুর পক্ষে কাজ করবেন না। গত ৫ বছর করা সাক্কুর কাজে সন্তুষ্ট নন এই জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী।

রবিবার সকালে তার ফেসবুক পেজে কুসিক নির্বাচন এবং কুমিল্লা জেলা প্রসঙ্গে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন কণ্ঠশিল্পী। আসিফের সেই স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:-

‘কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আসন্ন। কুমিল্লার সন্তান হিসেবে আমার ভূমিকা কি হতে পারে – এ নিয়ে মিডিয়া এবং জনমনের কৌতুহল এবং প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমার পূর্বেকার ভূমিকা এ প্রশ্নের জন্ম দেয়ার জন্য যথেষ্ট, তাই ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজনে এই লেখা। আমি একজন সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে বাংলাদেশে কুমিল্লার প্রতিনিধিত্ব করি। তাই বলে আমি শুধু কুমিল্লা জেলারই সন্তান নই, আমি বাংলাদেশের প্রতিটা ইঞ্চি মাটির সন্তান হিসেবে গর্ববোধ করি।

এবার সিটি ইলেকশন হচ্ছে দলীয় প্রতীকে, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এ পদ্ধতিটা আমার পছন্দ নয়। যদিও আমার পছন্দে কিছু যায় আসেনা। তবে সাধারন ভোটার হিসেবে আমি বিব্রত। আরো সাত বছর আগে আমি বিএনপি থেকে ব্যক্তিগত কারনে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি, মহাসচিবের স্বাক্ষর করা ‘বুঝিয়া পাইলাম’ পদত্যাগ পত্রের অনুলিপি আমার কাছে আছে। দলের কোন পর্যায়ের কোন পদে আমি নেই, এমনকি দুই টাকা ফর্মের সাধারন সদস্যও আমি না।

গত সিটি নির্বাচনে সাক্কু সাহেব বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। বিভিন্ন কারনে উনার পক্ষে কাজ করেছি সিঙ্গেল কাক হিসেবে, এই নির্বাচনে সাক্কু সাহেবের পক্ষে কাজ করার জন্য কাকের অভাব নাই। এবার তিনি মার্কা নিয়ে নির্বাচনে আছেন, তাই আমার যাবার প্রশ্নই আসেনা। এছাড়াও কুমিল্লা নগরবাসী হিসেবে আমি উনার কাজে সন্তুষ্ট নই। অপর পক্ষের প্রার্থী সীমা ভাবী, তিনি জিলা স্কুল ’৮৫ ব্যাচের বড় ভাই নিসারউদ্দিন আহমেদ মিন্টু ভাই এর স্ত্রী, এই হিসেবে আমার খুবই কাছের।

ওনার দল বা মার্কার কারনে ভোট দেয়া সম্ভব নয় বলেই আমি ভোট দিতে কুমিল্লাই যাচ্ছিনা, এমনকি ব্যক্তিগত সফরেও এ মাসে নিজের শহরে যেতে পারছিনা, কারন অহেতুক কথা ছড়িয়ে দেয়ার মত পাতি নেতায় কুমিল্লা সমৃদ্ধ হয়েছে ব্যাপক। শিক্ষিত লোকের জায়গা দখল করেছে অশিক্ষিতরা। প্রতিদিন ব্যাক ফুটে যাচ্ছে কুমিল্লার সমাজ ব্যবস্থা। পথিকৃৎ কুমিল্লা এখন অশিক্ষিতদের দ্বারা অধিকৃত।

সারা দুনিয়ায় কুমিল্লার মানুষ আমাকে যেখানে দেখেছে পেয়েছে বা পায়– বুঝেছি তারা আমাকে নিয়ে গর্ববোধ করে। আমি আঞ্চলিকতা বাদ দিয়ে তাদেরকে শুধু বাংলাদেশের কথাই ভাবতে বলি। আঞ্চলিকতা মানসিকতাকে ক্ষুদ্র করে ফেলে, এতে অঞ্চলের ক্ষতি হয় যেমন, দেশেরও ক্ষতি হয় ঠিক তেমন। এদেশে আমি সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছি, এখনো নিজের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট।

পুরোদমে গাইছি, গায়ক আসিফ ভাল আছে, আমাকে আপাততঃ গাইতে দিন। আর এটা কোন রাজনীতিকের পেজ নয়, একজন গায়কের ফ্যান পেজ। তবে বিভাগ প্রশ্নে দাবী একটাই- ‘ময়নামতি নামে নয়, কুমিল্লা নামেই বিভাগ চাই ’। কেউ আমাকে ভুল বুঝলে নিজ দায়িত্বে বুঝবেন । সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, সুন্দর থাকুন। ভালবাসা অবিরাম।



মন্তব্য চালু নেই