কী হয়েছিল এপোলো-১ নভোচারীদের?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসার বিগ বাজেটের মহাকাশ মিশন এপোলো। আর এই মিশনের প্রথম অভিযানের শুরুতেই করুণ মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলেন নাসার প্রশিক্ষিত তিন নভোচারী। এরা হলেন- ভারগিল গ্রিসম, এডওয়ার্ড হোয়াইট ও রজার শ্যাফে।

এপোলো-১ এর এই তিন প্রশিক্ষিত নভোচারী জীবন দিয়ে শিখিয়ে গেছেন যে, কোথাও ১০০% ভাগ অক্সিজেন থাকা অবস্থায় কাজ করতে নেই।

এপোলো-১ এর উৎক্ষেপনের তারিখ ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৭। এদিন উৎক্ষেপন নিশ্চিত করতে ‘প্লাগ আউট’ নামে একটি পরীক্ষা করে তাতে সন্তুষ্ট হয়। এতে নভোচারীদের ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো কিছুই ছিল না।

উৎক্ষেপন তারিখের প্রায় মাস খানেক আগে ২৭ জানুয়ারি, ১৯৬৭ তারিখ দুপুর ঠিক একটায় নভোচারীরা কমান্ড মডিউলে ঢুকে পড়েন। সবকিছু ঠিকঠাক দেখার পর ০১:২০ মিনিটে শুরু করা হয় কাউন্টডাউন। কিন্তু হঠাৎ একটা বাজে গন্ধ পাওয়া যায়। কাউন্টডাউন থামিয়ে বাতাসের স্যাম্পল নেয়া হয়। তবে তাতে গন্ধটা যে ক্ষতিকর নয় তা বের করা হয়। এরপর গন্ধ দূর করে ০২:৪২ মিনিটে ফের কাউন্টডাউন শুরু করা হয়।

টেস্টের সময় হ্যাচ বন্ধের পর ভেতরকার বাতাস ১৬.৭ পিএসআই অক্সিজেন দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। এ সময় যোগাযোগ করাতে সমস্যা হওয়ায় গ্রিসম মন্তব্য করেন, ‘এখন আমরা মাত্র দুই তিনটি বিল্ডিং থেকে যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছে, যখন চাঁদে যেতে থাকব তখন কি হবে?’

ওইদিনের টেস্ট শেষ করতে প্রায় সন্ধ্যা লেগে যায়। একদম শেষে যখন আর মাত্র প্রায় ১০ মিনিট বাকি, ০৬:৩০ এর দিকে হঠাৎ এসি বাস দুই ভোল্টেজে বেড়ে যাওয়া দেখেন। এর প্রায় ৯ সেকেন্ড পর গ্রিসম রেডিওতে চিৎকার করে ওঠেন, ‘ফায়ার, ফায়ার’ বলে। এরপর রেডিও ট্রান্সমিশন আর কয়েক সেকেন্ড চলে। শেষ হয় কয়েকজন মানুষের প্রচণ্ড আর্তনাদে। কেবিনে মারা যান তিনজনই। বিস্ফোরণের সময় ওই কেবিনে অক্সিজেনের চাপ ছিল ২৯ পিএসআই। সূত্র: মহাকাশের কথা।



মন্তব্য চালু নেই